কোনো বিদেশি যত দিনের ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন, এখানে কোনো মোবাইল সিম কিনলে তার মেয়াদও ততদিনই হবে।
Published : 07 Apr 2016, 08:01 PM
ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই সিম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
তিনি বলেন, “সম্প্রতি একটি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে বাংলাদেশে ভ্রমণে আসা বিদেশিদের ভিসার মেয়াদ পর্যন্ত মোবাইল সিম ব্যবহার করতে পারবেন।”
বর্তমানে বাংলাদেশে সফরে আসা বিদেশিরা পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিয়ে মোবাইল সিম কিনতে পারেন, তবে তারা চলে যাওয়ার পরও তা চালু থাকে।
অপারেটরগুলো কীভাবে ভিসার মেয়াদ বুঝবে- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “পাসপোর্টের কপি তো অপারেটরদের কাছে থাকবে। এর মাধ্যমে তারা জানবেন, ভিসার মেয়াদ কত দিনের।”
সম্প্রতি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বিদেশিকে গ্রেপ্তারের কয়েকটি ঘটনায় দেখা গেছে, তারা ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও অবৈধভাবে বাংলাদেশে থাকছিলেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে থাকা মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধনেরও একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কোনো সিম একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বন্ধ থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে তা অপারেটররা বিক্রি করতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ের মধ্যে দেশে না আসতে পারলে প্রবাসীদের সিম চালু রাখতে তাদের আত্মীয়ের (যার কাছে সিম রয়েছে) নামে সিমটি পুনঃনিবন্ধন করে রাখতে পারবেন। প্রবাসী ব্যক্তি এসে তার মালিকানা পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
মূলত প্রতিটি সিমের মালিকানা নিশ্চিত করতেই এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, বলেন তারানা হালিম।
মোবাইল সিমের অপব্যবহার ঠেকাতে বর্তমানে সব গ্রাহককে আঙুলের ছাপ দিয়ে পুনঃনিবন্ধন করতে হচ্ছে।
সিম পুনঃনিবন্ধনে কয়েকটি সমস্যা সমাধানেও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
“অনেকের আঙুলের ছাপে সমস্যা দেখা দিয়েছে, অনেকের ছাপ স্পষ্ট নয়। অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে এ ধররেনর সমস্যা চিহ্নিত হলে অপারেটররা তাদের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে পাঠাবে, সেখানে নতুন করে আঙুলের ছাপ দিয়ে সিম নিবন্ধন বা পুনঃনিবন্ধন করবে।”
দেশের ৫১৪টি আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে এজন্য বায়োমেট্রিক ডিভাইস স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
যাদের আঙুল নেই বা দুই হাতই নেই, তাদের বিষয়ে নির্বাচন অফিসে গিয়ে সিম পুনঃনিবন্ধন করতে হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এক্ষেত্রে গ্রাহকের ছবি দেখে নিশ্চিত হওয়ার পর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে তাদের পুনঃনিবন্ধন করতে হবে।”
কোনো নাবালককে যদি সিম দেওয়া হয় তাহলে সেই ফর্ম নিবন্ধন তার অভিভাবকের নামে হলেও নাবালকের নাম লিখতে হবে।
“কারণ যদি কোনো নাবালক অপরাধ করে তাহলে সে অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা হবে,” বলেন প্রতিমন্ত্রী।
গত ১৬ ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না।
পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরনো সিমের পুনঃনিবন্ধন চলছে, যা এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন প্রতিমন্ত্রী।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি নাগাদ ২ কোটি ৫৩ লাখ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন বা পুনঃনিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে বলে বিটিআরসির তথ্য।