রাজধানীর ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলায় শুনানি হলেও সাংসদপুত্র বখতিয়ার আলম রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পঞ্চমবারের মতো পিছিয়েছে।
Published : 28 Feb 2016, 01:15 PM
রোববার ঢাকার দ্বিতীয় মহানগর দায়রা জজ সামছুন নাহার মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে রনির আবেদনের শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য ৬ মার্চ দিন ঠিক করে দেন।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী কাজি নজিবুল্লাহ হিরু; রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি ছিলেন এস এম জাহিদ সরদার।
জাহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই দিন আসামি দোষ স্বীকার করলে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী সেদিন থেকেই তার দণ্ডভোগ শুরু হবে।আর নির্দোষ দাবি করলে বিচার শুরু হবে।
তবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার দুই চালক রনির ছোড়া গুলিতেই মারা গেছেন কি না তা স্পষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন রনির আইনজীবী নজিবুল্লাহ।
“গুলি পরীক্ষাসংক্রান্ত প্রতিবেদনে (ব্যালেস্টিক পরীক্ষা) স্পষ্ট উল্লেখ নেই এ বিষয়ে। সুতরাং আসামি নির্দোষ।”
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি জাহিদ বলেন, “মামলার অভিযোগ গঠন করায় কোনোরকম আইনের লঙ্ঘন হবে না।”
এদিকে এই মামলায় বারবার অভিযোগ পেছানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওই ঘটনায় নিহত অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলীর মেয়ে রিনা আক্তার।
আদালতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আজকেই বিচারকের এই বিষয়ে আদেশ দেওয়া উচিত ছিল। আজকে নিয়ে (অভিযোগ গঠনের জন্য) পাঁচটি তারিখ পার হয়ে গেল।”
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি রনির ‘অসুস্থতা’ ও তার আইনজীবীর ‘নির্বাচনী ব্যস্ততার’ কারণ দেখিয়ে চতুর্থবারের মতো অভিযোগ গঠন পিছিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেছিলেন একই বিচারক।
এদিকে রোববার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরুর আগে রনিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির করা হয়।
গতবছর ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে নিউ ইস্কাটনে গাড়ি থেকে ছোঁড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হন রিকশাচালক হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী আহত হন।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ১৫ এপ্রিল রমনা থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ৩১ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনিকে আটক করে।
এর পর ২১ জুলাই রনিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই দীপক কুমার দাস।
তদন্তের সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাতাল অবস্থায় থাকা রনি যানজটে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকার এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালান।