রোববার সকালে এই হত্যাকাণ্ডের পর রাতে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দায় স্বীকারের এই বার্তা, যাদের খবরের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের।
সাইটের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, দি ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে শ্রী শ্রী সন্তগৌরীয় মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়কে হত্যার দাবি জানিয়েছে।
আরবিতে লেখা আইএসের বার্তা উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলেছে, ‘আল্লাহর ইচ্ছায় খলিফার সৈনিকরা’ দেবীগঞ্জ মন্দিরের পুরোহিতকে হত্যা করেছে। তার এক সহযোগীও হালকা অস্ত্রের গুলিতে আহত হয়েছে।
“মুজাহিদরা অক্ষত অবস্থায় তাদের আস্তানায় ফিরেছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।”
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় করতোয়া নদীর ধারে সকালে মঠে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করা হয় এই ধর্মগুরুকে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, হামলাকারী ছিল তিনজন, তারা এসেছিল মোটর সাইকেলে এবং তাদের সঙ্গে ধারাল অস্ত্রের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল।
গত বছর ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা এবং রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও হত্যা, বগুড়ায় শিয়া মসজিদে এবং ঢাকায় শিয়া সমাবেশে হামলার পরও আইএসের দায় স্বীকারের খবর দিয়েছিল সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।
তবে ওই সব ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যের এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি দাবি করে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে আইএস বা এ ধরনের কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর তৎপরতা নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেন, বাংলাদেশকে ‘আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের মতো’ ব্যবহার করার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া হত্যা ও হামলার পেছনে আইএস থাকার স্বীকারোক্তি দিতে ‘চাপ’ আসছে।
এদিকে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে পঞ্চগড়ের সব মন্দির-ধর্মশালায় নিরাপত্তা জোরদার ছিল দাবি করে জেলার পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহাম্মেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, “কারা হত্যাকারী এবং কী কারণে এমন হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
“তদন্তের মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারী খুঁজে বের করা হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, “পঞ্চগড়ে এমন ঘটনা এটাই প্রথম। দুষ্কৃতিকারীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতেই এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”