Published : 26 Apr 2025, 08:24 PM
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেওয়া আট দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে ডিস্যাবিলিটি রাইটস ওয়াচ (ডিআরডব্লিউ)।
শনিবার ঢাকার ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইনি ও নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে প্রায় সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা পদে পদে অধিকারবঞ্চিত।
ডিআরডব্লিউ গত ২ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে আট দফা সুপারিশ পেশ করে।
এগুলো হল, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক অ্যালোকেশন অব বিজনেস সংশোধন, আইন বাস্তবায়ন কমিটিগুলোকে সচল করা, সিআরপিডি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ, এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ও প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক বাজেট, সরকারি চাকরিতে কোটা, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন পুনর্গঠন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ক্রীড়া পরিষদ গঠন।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রতিবন্ধীদের অধিকারের আন্দোলনকে সকল মানুষের আন্দোলনে রূপান্তরিত করতে হবে। এজন্য প্রত্যেকের মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
“বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন তাতে এ বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মূল আন্দোলনটাই ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, শুধু কোটার জন্য ছিল না।”
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিক প্রতিনিধিত্বের সরকার। এ কারণে তাদের কাছে মানুষ অন্যরকম পরিবর্তন আশা করে।
“আমাদের কোনো অভিযোগ নয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে যেসব সুপারিশ করা হয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিবন্ধী মানুষ সংক্ষুব্ধ। আমরা আবার নতুন করে প্রস্তাবগুলো পূরণের দাবি জানাচ্ছি সরকারের কাছে। অতি গুরুত্ব বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে যে বিষয়গুলো তা বাস্তবায়ন করবেন।”
সংবাদ সম্মেলনে ডিআরডব্লিউর সভাপতি মনসুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রতিবন্ধীরা দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ। তাদের পাশ কাটিয়ে দেশের উন্নয়ন করা যাবে না। এ কারণে তাদের সমাজের মূল স্রোতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
“প্রতিবন্ধীরা প্রথমে মানুষ, এরপরে কেউ বাক, কেউ শ্রবণ কেউ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আমাদের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। আমরা অন্তর্ভূক্তিমূলক একটা সমাজে বাস করতে চাই, ইনটিগ্রেশনে আসতে চাই।
“গত এক বছরে আমরা অন্ধকার থেকে আলোর পথে এসেছি। পৃথিবীতে অনেকে আছেন প্রতিবন্ধী হয়ে শুধু নিজেরা জয়ী হননি, প্রতিবন্ধী সমাজকে সামনের দিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন।”
সংবাদ সম্মেলনে ডিআরডব্লিউর সদস্য সচিব খন্দকার জহুরুল আলম, নির্বাহী পরিচালক এ এইচ এম নোমান খান, সদব্য মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রতিবন্ধী উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ডা. নাফিসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।