পুলিশ বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরুর পর থেকে এই সমস্যার শুরু।
Published : 16 Dec 2024, 01:06 AM
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে তীব্র যানজটে ভুগতে হল রাজধানীবাসীকে; যার মূল কারণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যানবাহন প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ এবং মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠানের মঞ্চ বসানোকে সামনে এনেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
রোববার রাজধানীর সড়কগুলোয় যানবাহনের গতি কমতে থাকে মূলত দুপুরের পর। এক পর্যায়ে গাড়ির চাকা থেমে যাওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
যানজটের প্রভাবে সড়কের চাপ পড়ে মেট্রোরেলের ওপর। যানবাহন ফেলে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের পথ ধরা মানুষের সংখ্যাও ছিল অনেক।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার ঘোষণা আসার পর থেকে এই সমস্যা শুরু হয়।
“অন্যদিকে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নামে কনসার্ট আয়োজন হওয়ায় করা হয়। এই দুই কারণে রাজধানীজুড়ে শুধু যানজট নয়; মহাযানজট তৈরি হয়।”
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে’ বলা হয়, শুক্রবার, শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা এবং অফিস চলাকালীন দিনগুলোতে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি, জরুরি সেবা (অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, রোগী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য সরকারি গাড়ি) ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না।
যদিও এ বিজ্ঞপ্তির আগের দিন শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশ পথে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রবেশপথগুলো হলো- শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, বার্ন ইউনিট, শিববাড়ি ক্রসিং, ফুলার রোড, পলাশী মোড় ও নীলক্ষেত।
অতিরিক্ত কমিশনার নজমুল হাসান বলেন, “আমরা রাত ১০টার পর মানিকমিয়া এভিনিউয়ে মঞ্চ তৈরি করতে বলেছিলাম। কিন্ত তারা বিকাল ৩টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু করে দেন। এজন্য মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে আসার সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।
“যানজট কমাতে আড়ংয়ের সামনে এর আগে যে অস্থায়ী ডাইভারশন করা হয়েছিল, সেটা তুলে দেওয়া হয়। আমাদের সবাই মাঠে আছে, কিন্তু করারও কিছু নেই- কিছু করতেও পারছি না। যদি গেইট বন্ধ থাকে তা হলে তালা ভেঙেতো ঢুকতে পারবেন না।”
যানজটের তীব্রতায় একটা পর্যায়ে মিরপুর রোড, আসাদগেইট হয়ে ধানমন্ডি, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, পান্থপথ, কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাব হয়ে শাহবাগ, মহাখালী, মগবাজার, মালিবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড, ইংলিশ রোড, বংশাল, বকশিবাজার, বঙ্গবাজার এলাকায়ও গাড়ি চলে অত্যন্ত ধীরগতিতে।
সড়কের এই পরিস্থিতে এড়াতে অনেকে ছুটেছেন মেট্রোরেল ধরতে। স্টেশনগুলোতে দেখা গেছে প্রচণ্ড ভিড়। টিকিটের জন্য লম্বা লাইন। অনেকে টিকেট না পেয়ে ফিরে গেছেন।
বেলা সাড়ে ৫টার দিকে বিজয়সরণি মেট্রোরেল স্টেশনের গেট দিয়ে ‘সিঙ্গেল' টিকেটের যাত্রীদের প্রবেশ না করার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করতে দেখা যায়।
যিনি মাইকিং করছিলেন, তিনি বলেন, “সিঙ্গেল টিকেট শেষ হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”