সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেনকে ‘বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন ভদ্র মানুষ’ হিসাবে বর্ণনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 25 Oct 2023, 05:33 PM
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে’ তাকে অভিযুক্ত করা হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি ‘নির্দোষ প্রমাণিত হন’।
সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবুল হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার মারা যান।
রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাদারীপুর-৩ আসন (কালকিনি-ডাসার-সদরের একাংশ) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর তিনি সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের মন্ত্রিসভায় তিনি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি দায়িত্বে থাকার সময় ২০১১ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তি হয়। পরে ওই প্রকল্পে অনিয়মের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে বিশ্ব ব্যাংক, যা নিয়ে মামলা হয় কানাডা ও বাংলাদেশে।
সমালোচনার মধ্যে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় আবুল হোসেনকে। দুর্নীতির অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এলেও ঘরে-বাইরে চাপের মধ্যে ২০১২ সালে তাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরে যেতে হয়।
কিন্তু পরে দুর্নীতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে রায় দেয় কানাডার একটি আদালত। বাংলাদেশেও দুদকের তদন্তে একই ফল আসে।
অনেক টানাপড়েনের পর বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু নির্মিত হয় সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে। তবে সৈয়দ আবুল হোসেনের আর রাজনীতিতে ফেরা হয়নি।
পুরো বিষয়টির জন্য বাংলাদেশের কিছু সংবাদপত্র ও ‘বিশিষ্ট’ ব্যক্তিকে দায়ী করে ২০১৭ সালে এক বিবৃতিতে আবুল হোসেন বলেছিলেন, “আমাকে হেনস্তা করে কী পেলেন”।
সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেনকে ‘বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন ভদ্র মানুষ’ হিসাবে বর্ণনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তার মত একজন দেশপ্রেমিক জনদরদী ব্যাক্তিত্বের মৃত্যুতে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হল।
“দেশের কল্যাণে মরহুম সৈয়দ আবুল হোসেনের আত্মত্যাগ জাতি সবসময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।