একে তো রাস্তায় যানজট, তার ওপর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেল থেকে একসঙ্গে অনেক যাত্রী নেমে আসায় বিকল্প বাহনও মিলছিল না।
Published : 18 Sep 2024, 02:36 PM
পা ব্যথার চিকিৎসা করাতে মিরপুর থেকে শাহবাগে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন মাঝবয়সী সায়রা আক্তার। কিন্তু কারিগরি ত্রুটিতে মাঝপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাকে আগারগাঁও স্টেশনে নেমে পড়তে হয় অসুস্থ শরীরেই।
তারপর বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিকশা ধরতে না পারায় শেষমেশ ফুটপাতেই বসেই পড়েন সায়রা।
একই জায়গায় বাবার কোলে চড়া তিন বছরের ফাবিহাকে কাঁদতে দেখা যায়। তার বাবা সেলিম খান বললেন, তাদের গন্তব্য ফার্মগেইট। কিন্তু পথে বাস কম হওয়ায় গরমের মধ্যে মেয়েকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন তিনি।
সায়রা আক্তার, সেলিম খানের মত আরো বহু মানুষ যারা মেট্রোতে চড়ে রাজধানীতে চলাফেরা করেন, তারা বুধবার পড়েছেন ভোগান্তিতে।
একে তো রাস্তায় যানজট, তার ওপর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেল থেকে একসঙ্গে অনেক যাত্রী নেমে আসায় বাস বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়েও বেগ পেতে হয়।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মেটোরেল পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকলেও উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও অংশে ট্রেন চলাচল অব্যাহত আছে।"
গরমের মধ্যে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ফজলে রাব্বি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার অফিসে ঢোকার সময় পেরিয়ে গেছে অনেক্ষণ, কিন্তু তিনি কোনো বাস পাচ্ছেন না।
“সামনের রাস্তায় তীব্র জ্যামের কারণে কোনো গাড়িই জায়গা থেকে নড়ছে না। ফলে বাসও আসছে না। তাই ওই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছি। আমি যাব মতিঝিল- কিন্তু বাস, সিএনজি, বাইক কিছুই তো পাচ্ছি না। একটি বাসে ওঠার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ১০ জন মানুষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেও উঠতে পারিনি।”
হাসপাতালগামী অসুস্থ সায়রা আক্তার বলেন, “জ্যামের কারণে সিএনজিও পাচ্ছি না। আর দুই একটা যা পাই তাও ভাড়া চায় ৪০০ ট্যাকার বেশি।”
আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনের নিচের জায়গাটিতে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা সেলিম খান বলেন, “এই গরমে ছোট বাচ্চাটারে নিয়া পড়ছি ঝামেলায়। আশেপাশে কিছুই নাই যে বসমু। এক ঘণ্টা ধইরা এক জায়গায় দাড়াইয়া আছি। এই ভাবে জানি না কতক্ষণ থাকমু। একটা গাড়ি পাই না বাচ্চাটা আমার কানতাছে।”
ডিএমটিসিএল এমডি মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, "ফার্মগেট স্টেশনে ট্রেনের নিচের যে ভায়াডাক্টের তিনটা লেন আছে, সেখানে মাঝদিয়ে যে স্প্রিংটা থাকে- তা ডিসপ্লেস হয়ে গেছে।
“যার কারণে আপাতত এই স্টেশন দিয়ে মেট্রোরেল চালানো থেকে বিরত রাখা হয়েছে, এটা মূলত সেইফটির জন্য। উত্তরা থেকে সরাসরি মতিঝিল ট্রেন চলছে না।”
ত্রুটি সারাতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।