লোড শেডিং-গরমে জেরবার; বিদ্যুতের খরা কাটবে কবে?

রোজ রোজ দুর্ভোগে নাকাল নগর-গ্রামের বাসিন্দারা; আর ব্যবসায়ীদের নেতা জসিম উদ্দিন বলছেন, ‘অন্ধকার অনেক ব্যয়বহুল’।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2023, 08:33 PM
Updated : 3 June 2023, 08:33 PM

ঢাকায় দিনে, রাতে কিংবা ভোরে বিদ্যুৎ যাচ্ছে নিয়মিত বিরতিতে; ঘড়ির কাঁটায় মেপে মেপে কোথাও আসছে এক ঘণ্টা কোথাওবা এরও বেশি সময় পর, গ্রামের অবস্থা আরও সঙ্গীন। তাপদাহের মধ্যে ভ্যাপসা এ গরমে লোড শেডিংয়ের সেই সময়টুকু যেন এক যন্ত্রণা হয়ে ঘুরে ফিরে আসছে দিনে-রাতের বড় একটা সময়জুড়ে।

শুধু ঘরেই ভুগতে হচ্ছে তা নয়, অফিস আর সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের মতো বাদ যাচ্ছে না শিল্প কারখানাও; বিঘ্নিত হচ্ছে উৎপাদন, বাড়ছে ব্যয়।

মাঝে কিছুটা সময় কমলেও তাপপ্রবাহ নিয়ে হাজির হওয়া গ্রীষ্মের মধ্যে তা এখন ধৈর্য্যের পরীক্ষাকে চরমে নিয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়াই এর কারণ। গ্যাস, কয়লা ও তেল- তিন মাধ্যমের বিদ্যুৎকেন্দ্রই একের পর এক বন্ধ হচ্ছে, আগে থেকে যেগুলো বন্ধ সেগুলোও চালু হচ্ছে না। এতে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সংকটে বাড়ছে লোড শেডিং; কবে মুক্তি মিলবে অসহনীয় এ দুর্দশা থেকে, সেই প্রশ্ন নগর-গ্রাম সবখানের বাসিন্দাদেরই।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ নিয়ে আগের মতই দুঃখ প্রকাশ করলেও দুর্ভোগ কবে কাটবে সেই ভালো সময়ের বদলে আরও কিছুটা ভুগতে হবে বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন।

শনিবার ঢাকার সাভারে তিনি বলেন, “কয়েকটা বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল না থাকায় লোড শেডিং বেড়ে গেছে, কিছুটা জনদুর্ভোগ হচ্ছে। এই কারণে আমরা খুবই দুঃখিত বিষয়টি নিয়ে।

“আমাদের এই মুহূর্তে কিছুটা লোড শেডিং চলছে এবং এটা কিছুদিন যাবে।”

তবে পিডিবির প্রকৌশলীরা পরিস্থিতি উন্নতির আশা দেখছেন। কিছু কেন্দ্রে গ্যাস পাওয়ার আভাস তাদের আশাবাদী করছে। একই সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণে থাকা কিছু কেন্দ্র উৎপাদনে ফিরবে, ভারতের আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসা বাড়বে এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লাভিত্তিক একটি কেন্দ্র চালু হবে।

যদিও আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে বিদ্যুতের সংকট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এমন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বিকল্প কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

পিডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক দিন ধরে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে গড়ে ১৫০০ থেকে ১৭০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ফলে একেক সময় একেক এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে এই ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে।

চাহিদা বাড়ার বিপরীতে সরবরাহের এ ফারাকের বিষয়ে ওয়াজেদ আলী জানান, কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র নানা কারণে বন্ধ থাকাই এর কারণ।

গরম ও লোড শেডিংয়ে জেরবার জীবন, ব্যবসা-শিল্প

“দুপুর আর মধ্যরাতে বিশেষ করে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, এটা প্রতিদিন হচ্ছে। এর বাইরেও বিদ্যুৎ যায়। বিদ্যুৎ গেলে ওয়াই ফাই চলে যায়। এতে বাসার সবারই সেলুলার ইন্টারনেট কিনতে হচ্ছে, ফলে খরচ বাড়ছে। আর রাতে বেশি সময় বিদ্যুৎ না থাকলে পুরোটা সময় জেনারেটর চলে না। তখন গরমে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।”

বিদ্যুৎ নিয়ে যে রোজ রোজ দুর্ভোগ পোহানোর- এ কথাই বলছিলেন ঢাকার মিরপুরের দক্ষিণ মনিপুর এলাকার মিফতাহুল জান্নাত।

এই উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ার মা রাশেদা খাতুন বললেন, “গ্যাসের সিলিন্ডারে ব্যয় বাড়ায় রান্নার জন্য ইলেকট্রিক চুলার ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। লোড শেডিং চলায় রান্নার কাজটা নিয়ে এখন বাড়তি চিন্তা করতে হচ্ছে, আলাদা করে সময় বের করে রাখতে হচ্ছে।”

অসহনীয় গরমের মধ্যে বিদ্যুতের যাওয়া-আসা যেমন মানুষকে ভোগাচ্ছে, তেমনই বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

তাদের ভাষ্য, ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। অনেক কারখানায় জেনারেটর নষ্ট হয়ে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যারও সৃষ্টি হচ্ছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, “বিদ্যুতের সমস্যা এখন জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। শিল্প কারখানায় দিনে ৬/৭ বার করে বিদ্যুৎ চলে যায়। কয়েকদিন আগে আমার একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার একপর্যায়ে আমার একটা জেনারেটর বার্স্ট হয়ে গেছে। প্রোডাকশনের পুরো লাইন হ্যাম্পার হয়েছে।

“২/১ বিদ্যুৎ গেলে হয়তো সেটা সামাল দেওয়া হয়। কিন্তু দিনে যদি ৭/৮ বার বিদ্যুৎ যায় আর আসে, সেক্ষেত্রে বিকল্প জেনারেটর দিয়েও বা কতটুকু কী করা যাবে? এসব করতে করতে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। এই গ্যাস-বিদ্যুতের কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এত বড় অর্জন এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা যদি ত্বরিত সমাধান না হয়, আমাদের সব অর্জন ব্যর্থ হয়ে যাবে।”

শনিবার প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে ডাকা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সংবাদ সম্মেলনও পড়ে লোড শেডিংয়ের কবলে। কিছুক্ষণের মধ্যে জেনারেটরের ব্যাকআপও বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাধ্য হয়ে মাঝপথেই সংবাদ সম্মেলন শেষের ঘোষণা দেন সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিন।

এর আগে তিনি বলেন, ‘‘অন্ধকার অনেক ব্যয়বহুল। দাম যতই হোক, বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো বিকল্প নেই।

“তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। বিদ্যুৎ না থাকার চেয়ে থাকাটা বেশি জরুরি। বেশি খরচ হলেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’’

কোন এলাকায় কেমন ঘাটতি

শনিবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৮০টি সমিতির গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন। তাছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও এর আশপাশের জেলায় লোড শেডিং হচ্ছে বেশি।

তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ওজোপাডিকো এবং উত্তরাঞ্চলে বিতরণের দায়িত্বে থাকা নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি-নেসকোর গ্রাহকরা তুলনামূলক কম ভোগান্তিতে রয়েছেন।

দেশের সবচেয়ে বড় বিতরণ কোম্পানি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৮০টি সমিতি ১০ দিন আগেও দৈনিক দুই হাজার মেগাওয়াটের মতো ঘাটতিতে পড়েছিল। তবে সম্প্রতি তা কমে দৈনিক গড়ে এক হাজার থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্তী।

গ্রীষ্মকালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে দৈনিক গড়ে ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে।

ঢাকার অন্যতম বিতরণ সংস্থা ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তার বিতরণ এলাকায় ১৫০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোড শেড করতে হচ্ছে। ডেসকোর বিতরণ এলাকায় অফিস চলাকালে ১৩০০ মেগাওয়াটের কিছু বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।

ঢাকার আরেক বিতরণ সংস্থা ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, অফিস চলাকালে সংস্থাটির আওতাধীন এলাকায় ১৮০০ থেকে ১৯০০ মেগাওয়াট চাহিদা থাকে। গত কয়েক দিন ধরে দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

শনিবারের হিসাব তুলে ধরে তিনি বলেন, দুপুর ১২টার দিকে ১৬৫০ মেগাওয়াট চাহিদা ছিল, যার বিপরীতে সরবরাহ করা গেছে ১৪৫০ মেগাওয়াট।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিতরণের দায়িত্বে থাকা ওজোপাডিকোর পরিচালক বিভাগের নির্বাহী পরিচালক শামসুল আলম জানান, তার এলাকায় ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদা হচ্ছে। দৈনিক ৫০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট লোড শেড হচ্ছে।

উত্তরাঞ্চলের বিতরণের দায়িত্বে থাকা নেসকোর কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, শনিবার সকাল ৯টায় বিতরণ এলাকায় ৬৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল, তখন সরবরাহ করা যাচ্ছিল ৫৯১ মেগাওয়াট। দৈনিক গড়ে ১০০ মেগাওয়াট করে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

সমস্যা কোথায়

বিদ্যুৎ বিভাগ ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য উৎসসহ দেশে মোট ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার কথা জানাচ্ছে। তবে চলমান ১৫৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট উৎপাদন সক্ষমতা এখন ২৩ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট।

এই সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে গত ১৯ এপ্রিল ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। তবে মে মাসের বেশির ভাগ সময় ১২ থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে উৎপাদন সীমিত ছিল।

পিডিবির সদস্য ওয়াজেদ আলী জানান, কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ পর্যায়ে আছে। তেল সরবরাহের কিছুটা কমতি আছে। কয়লারও কিছু ঘাটতি আছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন কম হচ্ছে।

“তবে গ্যাস, তেল ও কয়লা যতটুকু পাওয়া যাচ্ছে, ততটুকুর সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। দিনে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট ও রাতে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।”

এদিকে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২/১ দিনের মধ্যে কয়লার অভাবে বন্ধ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার কর্মকর্তারা।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১২৪৪ মেগাওয়াট উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও গত বৃহস্পতিবার হয়েছে ৪৫০ থেকে ৬২২ মেগাওয়াট।

কয়লাভিত্তিক আরেক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা ৬১৭ মেগাওয়াট হলেও উৎপাদন করছে ৩২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

পিডিবির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে সিলেট অঞ্চলে গ্যাসভিত্তিক শাহজিবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে মেরামতের জন্য।

গ্যাস স্বল্পতার কারণে ঢাকা অঞ্চলে সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঘোড়াশাল ১০৮ মেগাওয়াট, টঙ্গী ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রায় বন্ধ বা স্বল্প উৎপাদনে রয়েছে।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২১০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গ্যাস স্বল্পতার কারণে অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে। ময়মনসিংহ অঞ্চলেও আরপিসিএল ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে। গ্যাসের স্বল্পতায় ভুগছে ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট সিসিপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

সমাধানে যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা

দেশে চলমান গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণ হিসাবে দেশে ডলার সংকট ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা উল্লেখ করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এর আগে সমস্যার সমাধানে দিনক্ষণের কথা উল্লেখ করলেও এবার তেমনটি বলছেন না তিনি।

শনিবার এক অনুষ্ঠানে জ্বালানি সংকটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তেলের ব্যাপারেও আমরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি, তেল আনতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। গ্যাসের ব্যাপারেও আমাদের সমস্যা হচ্ছে। এখন শিল্প সংযোগে বেশি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এখন আবহাওয়ার তাপমাত্রাও অনেক বেশি, যার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে।”

জাতীয় গ্রিডে প্রায় ১৭০০ মেগাওয়াট লোড শেড চলছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, “কয়লার অভাবে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ৫ তারিখের পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। কয়লা আবার আসতে আসতে ২০/২৫ দিন সময় লেগে যাবে। কয়লার এলসি খুলতে দেরি হয়েছে, এছাড়া অন্য বিষয়গুলোও ছিল। পায়রা থেকে বড় পরিমাণে বিদ্যুৎ আমরা আপাতত পাচ্ছি না।”

তবে আশার কথা শুনিয়েছেন পিডিবির সদস্য এস এম ওয়াজেদ আলী। তার ভাষ্য, “এই সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে। গ্যাস সরবরাহ কিছু বাড়বে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন শুরু করবে। আদানি থেকে বিদ্যুৎ আসার পরিমাণ আরও বাড়বে।

“চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এসএস পাওয়ারের বিদ্যুৎ আসতে শুরু করবে। মেনটেইনেন্সের জন্য কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র শাটডাউন দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আবার উৎপাদন শুরু করবে।”