দুপচাঁচিয়ার মেয়র জাহাঙ্গীরের জামিন স্থগিতই থাকছে

হাই কোর্টের জামিন আদেশ গত সোমবার দুদিনের জন্য স্থগিত করে বুধবার শুনানির দিন রেখেছিল চেম্বার আদালত ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2024, 09:54 AM
Updated : 27 March 2024, 09:54 AM

বিচারপতির আদেশ জালিয়াতির মামলায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়রকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ।

হাই কোর্টের ওই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদন শুনানি করে বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।

দুদকের ওই আবেদনে এর আগে গত সোমবার জাহাঙ্গীর আলমের জামিন দুদিনের জন্য স্থগিত করে বুধবার শুনানির দিন রেখেছিল চেম্বার আদালত।

অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাহাঙ্গীর আলম হাই কোর্টের বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া আদেশ তৈরি করেছিলেন। দুদকের তদন্তেও তার জালিয়াতি প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে তার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিলাম।

“হাই কোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত থাকবে। পরে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হবে।”

জাহাঙ্গীর আলম ২০০৭ সালে দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক। ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদক মেয়র জাহাঙ্গীর ও পৌর সচিব কার্তিক চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে মামলা করে।

মামলাটি চলাকালে জাহাঙ্গীর ও কার্তিকের পক্ষে আদালতে একটি স্থগিতাদেশ জমা দেওয়া হয়। সেখানে হাই কোর্ট দুদকের ওই মামলা স্থগিত করেছে বলে দেখানো হয়। এ দুই আসামির পক্ষে আব্দুল মজিদ নামে এক ব্যক্তি আইনজীবী হিসেবে হলফনামা আকারে আদালতে স্থগিতাদেশের ওই অনুলিপি জমা দেন।

পরে দেখা যায়, হাই কোর্টের অন্য একটি মামলার নম্বর ব্যবহার করে জালিয়তির মাধ্যমে ভুয়া স্থগিতাদেশ বগুড়ার আদালতে দাখিল করা হয়েছিল।

বিষয়টি নজরে আসার পর হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর রিট শাখার সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল মমিন বাদী হয়ে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন।

মামলায় জাহাঙ্গীর ও কার্তিক ছাড়াও শিক্ষানবিশ আইনজীবী বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপ সুখানগাড়ি বম্বপাড়ার সোলাইমান আলীর ছেলে আবদুল মজিদকে আসামি করা হয়।

পরে বগুড়া জেলা জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী মামলাটি গ্রহণ করে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের নভেম্বরে দুদক বগুড়ার সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান মেয়র জাহাঙ্গীরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ৭ মার্চ জাহাঙ্গীর আলম আত্মসমর্পণ করলে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

এরপর গত ২১ মার্চ জাহাঙ্গীর আলমকে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ থেকে জামিন নেন। হাই কোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে গত সোমবার (২৫ মার্চ) চেম্বার আদালত তা দুদিনের জন্য স্থগিত করে বুধবার শুনানির দিন রাখে চেম্বার আদালত।

পুরনো খবর

Also Read: বিচারপতির আদেশ জালিয়াতি: দুপচাঁচিয়ার মেয়রের জামিন স্থগিত