এমন এক সময় উপদেষ্টারা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন, যখন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
Published : 22 Oct 2024, 10:07 PM
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জোরদার হওয়ার মধ্যেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
সুপ্রিম কোর্টের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে দেখা করেন এ দুই উপদেষ্টা।
"আইন উপদেষ্টা ও তথ্য উপদেষ্টা দুপুর ২টায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। তারা প্রায় আধা ঘণ্টা ছিলেন।"
বৈঠক কী বিষয়ে কথা হয়েছে, সে বিষয়ে জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টে ওই বৈঠক যখন চলছে, তখন ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও আলাদাভাবে শহীদ মিনারে সমাবেশ করে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি জানায়।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা, যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সেদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর দেন। সেদিন রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।”
এরপর সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সেই সরকারের শপথ পড়ান।
তার আড়াই মাসের মাথায় গত ১৯ অক্টোবর মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ‘কোনো দালিলিক প্রমাণ’ তার কাছে নেই।
এ নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পান নাই, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার, উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল।”
সে কারণে মো. সাহাবুদ্দিন আর রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন কি না, উপদেষ্টা পরিষদ তা বিবেচনা করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলছেন, সংসদ কার্যকর না থাকায় সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের সুযোগ আর নেই। তবে তিনি পদত্যাগ করতে পারেন। সরকার তাকে পদত্যাগ করতে বলতেও পারে। আবার বিষয়টি নিয়ে সরকার সুপ্রিম কোর্টের মতামতও চাইতে পারে।