এ দম্পতি অর্থ উপাজর্নের কোনো গ্রহণযোগ্য উৎস দেখাতে পারেননি, বলেন দুদক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন।
Published : 12 May 2024, 11:38 PM
জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ১৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এক দম্পতির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুদক।
অনুসন্ধান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার মো. মাসুদুর রহমান ও এলিজা আক্তার উর্মি নামে এ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা দুটি করেন।
দুদক কর্মকর্তা জয়নাল বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ দম্পতি অর্থ উপাজর্নের কোনো গ্রহণযোগ্য উৎস দেখাতে পারেননি। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মো. মাসুদুর রহমান ও এলিজা আক্তার উর্মিকে ২০১৭ সালের ৭ অগাস্ট দুদক সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস দেয়। সেই নোটিসের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর তারা দুদকে তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।
দুটি মামলার এজাহারেই ঘটনার সময়কাল বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের ৩০ জুন থেকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
মাসুদুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী অনুযায়ী স্থাবর সম্পদের মূল্য ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা, ১০ হাজারের বেশি ইউএস ডলার এবং ৪০ ভরি স্বর্ণ (যার মূল্য উল্লেখ নেই) আছে। এ হিসাবে তার দাখিল করা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, ১০ হাজার ইউএস ডলার এবং ৪০ ভরি স্বর্ণ।
এ ব্যক্তি এর মধ্যে আয়কর বিবরণীতে দান হিসেবে পাওয়া ছয় কোটি টাকার কথা তুলে ধরেছেন, যা ২০০৮-০৯ করবর্ষের রিটার্নে এর আগে পাওয়া বলে দাবি করেছেন।
এ ছাড়া ২০১০-১১ করবর্ষে বাবা-মা থেকে দান হিসেবে আরও পেয়েছেন ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
অনুসন্ধান শেষে দুদকের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এ সম্পদের মধ্যে তিনি আট কোটি ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকা মূল্যের সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। এজন্য দুদক আই, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে এলিজা আক্তার উর্মির বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তার মালিকানাধীন স্থাবর সম্পদের মূল্য হিসাবে দেখানো হয় ৫২ লাখ ১৮ হাজার ৭২৫ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মূল্য দেখানো হয় ৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৫ টাকা। অর্থাৎ তার নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মোট মূল্য ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭০ টাকা।
এর মধ্যে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের সম্পত্তি স্বামীর নিকট থেকে হেবামূলে পেয়েছেন। ওই সম্পত্তির মূল্য বাদ দিয়ে তার অর্জিত সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৫০ লাখ ৫৩ হাজার ৭২৫ টাকা। এ হিসাবে তার অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
এসব অর্থ আয়ের উৎস হিসেবে দান হিসেবে পাওয়া ৪ কোটি ৪৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা দেখানো হয়, যা ২০০৯-১০ করবর্ষে আয়কর বিবরণীতে অতীতে পাওয়া বলে দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, উর্মি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত চার কোটি ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৪ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।