গত ৯ মে ভালুকার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে মেহেদী হাসান।
Published : 27 May 2024, 05:13 PM
ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গৃহবধূর মৃত্যু এবং তার দেড় বছর বয়সী ছেলে আহতের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার এবং গাড়িটি জব্দ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
বিচারপতি এম আর হাসান এবং বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
গত ৯ মে রাত ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন জায়েদা খাতুন (৩২) ও তার দেড় বছর বয়সী ছেলে মেহেদী হাসান।
পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ওই শিশু ও তার মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানকার চিকিৎসক তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান মা মারা যান।
তবে কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা জানা যায়নি বলে ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি মো. আতাউর রহমান জানান।
ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে আসার পর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিষয়টি বিচারপতি এম আর হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের আদালতে উপস্থাপন করেন।
গত ১৩ মে আদালত রুল জারি করে ৭টি নির্দেশনা দিয়েছিল।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, “আজ (সোমবার) সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. কাইয়ুম, ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ কামাল এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।”
তিনি বলেন, “সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিচারাধীন মামলা সম্পর্কে আদালতকে অবহিত না করে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, তাতে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা অভিযোগের আনা উচিত।
“কিন্তু আদালতে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করায় আদালত তা মঞ্জুর করে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।”
শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, গত ১০ মে ঘটনা ঘটলেও সাথে সাথে মামলা দায়ের না করে দুইদিন পরে এফআইআর দায়ের করা হয়। এজাহারে ভুক্তভোগীর ঠিকানা না পাওয়ার বিষয়ে বলা হলেও ১১ মে তারিখের জিডিতে ভিকটিমের লাশ শনাক্তের বিষয়ে তার ভাইয়ের কথা বলা হয়েছে।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “প্রতিবেদনে সিআরভি নামের গাড়ির যে সন্ধানের কথা বলা হয়েছে, তা ডিজিটাল মাধ্যমে দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব, কিন্তু পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় জড়িত গাড়ি ও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সোমবার আদালত তিনটি নির্দেশনা দিয়েছে, এগুলো হলো -
১. আগামী ৩ জুন সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও আসামিকে আইনের আওতায় এনে আদালতকে অবহিত করতে হবে এবং গাড়িটি জব্দ এবং আসামিকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আদালতে এসে জবাবদিহি করতে হবে।
২. বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে সংশ্লিষ্ট মামলার গাড়ি শনাক্ত করার জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করতে হবে।
৩. শিশুটির নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সহ অন্যান্য সকল বিষয় সময় সময়ে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আদালতকে অবহিত করতে হবে।
পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন ডিএজি ইয়াসমিন বেগম বীথি ও এএজি মুজিবুর রহমান।