১৯৫২ সালে চীন সফর করা তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শিশু কিশোরদের উপযোগী করে তুলে ধরা হয়েছে এই বইয়ে।
Published : 01 Feb 2024, 09:00 PM
বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ অবলম্বনে প্রকাশিত নতুন গ্রাফিক নভেলের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন শেষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের গবেষণা শাখা সিআরআই (সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন) স্টলে এসে তিনি নভেলটির মোড়ক উন্মোচন করেন। এরপর স্টল থেকে একটি কপিও কিনে নেন।
এদিন বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ফিতা কেটে মেলায় ঢুকেন সরকার প্রধান। এরপর বাংলা একাডেমির স্টল পরিদর্শন শেষে প্রাঙ্গণে প্রদর্শনী করা ছবিগুলো ঘুরে দেখেন। এরপর বিভিন্ন স্টল ঘুরে তিনি যান সিআরআই স্টলে।
সেখানে গ্রাফিক নভেল ‘শেখ মুজিবুর রহমান: আমার দেখা নয়া চীন’ এর মোড়র উন্মোচন করে তিনি বইটি হাতে নিয়ে ফটোসেশনে অংশ নেন। এরপর আরও বেশ কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেন।
সিআরআই জানিয়েছে, গ্রাফিক নভেল 'মুজিব' ছিল সংস্থাটির এই ধরনের প্রথম কাজ। বঙ্গবন্ধুকে শিশু-কিশোরদের বোঝার মতো করে উপস্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে সেটি প্রকাশের পর মেলে দারুণ সাড়াও।
১০ খণ্ডে এই গ্রাফিক নভেল প্রকাশের পর বঙ্গবন্ধুর লেখা আরেক বইকেও গ্রাফিক নভেল আকারে উপস্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়।
এর প্রকাশক হিসেবে আছেন সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। চিত্রায়ণ করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী। কাহিনী বিন্যাস ও সংলাপে কাজ করেছেন সিদ্দিক আহমেদ। প্রজেক্ট কিউরেশন ও সম্পাদনায় আছেন শিবু কুমার শীল।
নভেলটির মোড়কে যুবক বঙ্গবন্ধুকে দেখা যায় কোট টাই পরা অবস্থায় চশমা চোখে। পেছনে আছে চীনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ছবি।
১৯৫২ সালে শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করা তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা উঠে এসেছে এতে। অভিজ্ঞতাগুলো নিজের নোট খাতায় টুকে নিলেও তখনই পুরোপুরি লিখে উঠতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে লেখার অবসর মেলে ১৯৫৪ সালে কারাগারে বসে। প্রায় ৬৫ বছর পর ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমি থেকে বই আকারে প্রকাশিত হয় লেখাটি।
গ্রাফিক নভেলের বর্ণনায় বলা হয়, ২৫ দিনের চীন সফরকে বঙ্গবন্ধু কেবল একটি ভ্রমণ হিসেবে নেননি, নিয়েছিলেন রাজনৈতিক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে।
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর চীনের রাজনীতি, শাসনব্যবস্থা ও মানুষের জীবনযাত্রার কী পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল, তা বুঝতে প্রতিটি মুহূর্তকে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজে লাগান।
সফরে গ্রাম, শহর, কৃষিখামার, হাসপাতাল, কলকারখানা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রমজীবী মানুষের বাসস্থান গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন তরুণ শেখ মুজিব।
বিপ্লবের মাত্র তিন বছরের মাথায় চীনের যে অকল্পনীয় পরিবর্তন হয়েছিল তা তাকে অভিভূত করে। মুগ্ধ করেছে নয়াচীন সরকারের অকপটতা, সত্যবাদিতা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা।
পিকিং, নানকিং, সাংহাই, ক্যান্টন, হ্যাংচোসহ চীনের বড় বড় শহর ট্রেনযোগে সফর করেন শেখ মুজিব। সাক্ষাৎ পান চীনা বিপ্লবের মহান নেতা মাও সে তুংয়েরও।
মাওয়ের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসাও তরুণ শেখ মুজিবকে অনুপ্রাণিত করে।
এই গ্রন্থের প্রতিটি পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে থাকা রাজনৈতিক অন্তর্দৃষ্টি আভাস দেয় যে একদিন এই তরুণের হাতেই বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভার অর্পিত হবে, এই শেখ মুজিবুর রহমানই একদিন হয়ে উঠবেন দেশের জাতির পিতা।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রস্তুতিকালকে বুঝতে তার এই বইটি সহায়ক হবে বলে মনে করছে এর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।
বইটি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্থাপিত সিআরআই-এর ৮৭৮-৯৭৯ নম্বর স্টলে মিলবে।