স্থাপত্যও এক ধরনের ভাষা। কাশেফের সৃজনকর্মে যা এসে ধরে দিয়েছে, বলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
Published : 29 May 2024, 11:59 PM
আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সুরের মুর্ছনার ভিন্ন আঙ্গিকে হয়ে গেল স্থপতি কাশেফ চৌধুরীর দুই বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের এজ গ্যালারিতে স্থাপত্য বিষয়ক বই দুটির মোড়ক উন্মোচন এবং 'রাইজিং ওশানস অ্যান্ড স্পেস দ্যাট কেয়ার' শিরোনামে স্থাপত্যকলা বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হয়।
ঢাকাভিত্তিক স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান আরবানার পরিচালক কাশেফ চৌধুরীর 'দ্য কনশিয়াসনেস অব প্লেস’ ও ’রাইজিং ওশানস অ্যান্ড স্পেস দ্যাট কেয়ার’ নামের বই দুটি প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা 'কোয়ার্ট ভারল্যাগ'।
সন্ধ্যায় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রথমেই নিজের কাজের ধরণ সম্পর্কে ধারণা দেন ২০১৬ সালে স্থাপত্যকলায় আগা খান পুরস্কার পাওয়া এই স্থপতি।
তিনি পরিবেশ, প্রকৃতি ও নির্দিষ্ট অঞ্চলের জীবনধারা মাথায় রেখে কাঠামো নির্মাণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত প্রদর্শনীতে কাশেফ চৌধুরীর স্থাপত্যশৈলীর উপর ১৮টি আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ প্রদর্শনী চলবে ২ জুন পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে রাজ রূপা চৌধুরীর সরোদ বাদন যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। এই শিল্পী সরোদের ধ্রুপদী সুরে রাগ 'অনিল মধ্যম' পরিবেশন করে মোহিত করেন উপস্থিত সবাইকে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, স্থাপত্যও এক ধরনের ভাষা। কাশেফের সৃজনকর্মে যা এসে ধরে দিয়েছে। স্থাপত্যেও রঙ আছে, চিত্রকলার সঙ্গে এর সামঞ্জস্য আছে। স্থাপত্যের সঙ্গে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জনসমাজের সম্পর্ক আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থাপত্যকলার ক্ষেত্রটিকে আরও বিস্মৃত করার জন্য নানামুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন বলে তুলে ধরেন কামাল চৌধুরী।
তিনি বলেন, "আমাদের অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, যার মধ্যে স্থাপত্যকলার সম্পৃক্ততা অনেক। সেসব কাজে দেশের স্থপতিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।”
ভবিষ্যতে দেশের স্থপতিরা বিশ্বজুড়ে আরও সুনাম অর্জন করবে এবং স্থাপত্যকলার চর্চায় এই দুটি বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা তার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, “স্থাপনা নির্মাণের সঙ্গে প্রকৃতিকে মিলিয়ে অনন্য এক শিল্পরূপ নির্মাণ করেছে কাশেফ। দুই দশক ধরে কাশেফের কাজ দেখছি। সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা এবং ঢাকায় নির্মিত তার ভবনে যখন আলো, ছায়া, বৃষ্টি পড়ে তখন তা সবার জন্য বিশেষভাবে উপভোগ্য হয়ে উঠে।
”কাশেফ দেখিয়েছেন কিভাবে অবকাঠামোতে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস ব্যবহার করা যায়।”
কাশেফের বই দুটি পড়লে স্থাপত্যবিদ্যার পরিবর্তন এবং স্থাপত্যকে কিভাবে প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করে দিতে হয় তা জানা যাবে বলেও মনে করেন মনজুরুল ইসলাম।
২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস (রিবা) ঘোষিত 'বিশ্বের সেরা নতুন ভবন' হিসেবে স্বীকৃতি পায় কাশেফ চৌধুরীর নকশায় নির্মিত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল।
ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান অনুষ্ঠানে কাশেফ চৌধুরীর নির্মিত ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার এবং ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নির্মাণ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম, সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।