“রায় কার্যকর করার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের, সেটা করবে। তবে অহেতুক ড. ইউনূসকে গ্রেপ্তার বা জেলে নেওয়ার ইচ্ছা সরকারের নেই।”
Published : 04 Feb 2024, 07:16 PM
শ্রম আদালতে সাজা পাওয়া গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলা চলমান থাকায় এখনই অহেতুক তাকে গ্রেপ্তারের ইচ্ছা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
রোববার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের (সহকারী জজ) প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধনের পর এ কথা বলেন তিনি।
ইউনূসকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা, জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, “আমি আবারও বলছি, সরকারের গ্রেপ্তারের কোনো পরিকল্পনা নেই।”
শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় তিন বছর আগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের এক মামলায় গত ১ জানুয়ারি ইউনূসসহ চারজনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।
আপিলের শর্তে সেদিনই তাদের এক মাসের জামিন দেওয়ায় কাউকে কারাগারে যেতে হয়নি। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে এর বিরুদ্ধে আপিল করেন ইউনূস।
এরপর ২৮ জানুয়ারি আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাদের জামিন বহাল রাখে শ্রম আপিল ট্রাইবুনাল। সেই সঙ্গে সাজা স্থগিত করে মামলার রায়সহ নথি আগামী ৩ মার্চ আদালতে উপস্থাপনের তারিখ রাখেন বিচারক এম এ আউয়াল।
রোববার সাজার রায় স্থগিতের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করে কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। একইসঙ্গে আদালতের অনুমতি ছাড়া ইউনূস যেন বিদেশ যেতে না পারেন সে আবেদনও করা হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “এখানে যে মামলাগুলো চলমান আছে- এনবিআরের মামলা আছে কিছু, শ্রম আদালতের মামলা আছে কিছু এবং সেগুলোর বিচার হবে। সেখানে বিজ্ঞ বিচারকরা সেই মামলার মেরিটের ওপর রায় দেবেন। সেই রায় কার্যকর করার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের, সেটা করবে।
“তবে অহেতুক ড. ইউনূসকে গ্রেপ্তার বা জেলে নেওয়ার ইচ্ছা সরকারের নেই।”
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার বিষয়ে সাংবাদিকরা বলেন, সাগর-রুনির পরিবার হতাশা ব্যক্ত করে বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ১১ ফেব্রুয়ারি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের একযুগ পূর্ণ হতে যাচ্ছে। মামলাটির তদন্ত করছে র্যাব। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ১০৫ বার সময় নেওয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় সিআইডি বা পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হবে কিনা, জানতে চাওয়া হয় আইনমন্ত্রীর কাছে।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, “আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এই হত্যাকাণ্ডের আসল অপরাধীদের ধরে তাদের অবশ্যই বিচার করা হবে। এই হত্যার বিচারটা হারিয়ে যাবে না, এটাও আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর আমাদেরও কিন্তু এরকম একটা হতাশা ছিল। হতাশা আরও গাঢ় ছিল।
“এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়ার জন্য যে পদক্ষেপ সরকারের নেওয়া উচিত, নিশ্চয়ই সরকার সেটা নেবে। যদি মনে হয়, র্যাবের তদন্ত জায়গাটা পরিবর্তন করা দরকার, অবশ্যই আমরা সেটা করব। কিন্তু র্যাব যেটা করছে, সেটা র্যাবের ব্যর্থতা বলে আমার মনে হয় না। ঘটনাটা যেভাবে ঘটেছে, সেটা যেকোনো ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সির জন্য একটু কঠিন। এজন্যই আমি বলব একটু অপেক্ষা করা প্রয়োজন।”