দূরের যুদ্ধ ভোগাল গ্যাস-বিদ্যুতে

বছরের শেষ দিকে বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমে আসা, দেশেও সঙ্কট কিছুটা কাটার মধ্যে একেবারে শেষ দিকে পদ্মার ওপার থেকে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র রামপাল ও পায়রার বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়া জোগাচ্ছে আশা।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2022, 06:59 PM
Updated : 28 Dec 2022, 06:59 PM

ভালো চলছিল সবকিছুই, ধারাবাহিক অগ্রগতির চূড়ান্ত ধাপে বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যন্ত প্রান্তিকও হয়ে উঠেছিল আলোকিত; দেশ ছুঁয়েছিল শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলক। যদিও সেই সুখ সইলো না বেশিদিন। সুদূরের এক যুদ্ধের প্রভাব আছড়ে পড়ল বাংলাদেশে- পাল্টে দিল অনেক কিছুই।

বছরের মাঝামাঝিতে ভুলতে বসা লোডশেডিং অনেক দিন বাদে ফিরে এল ঘটা করে। গ্যাসের অভাবে থেমে গেল কারখানার চাকা। বিদ্যুতের গ্রিড বিপর্যয়ে ভয়ংকর এক অন্ধকারের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হল সবাই।

বছরের শেষে এসে বিশ্বকাপ ফুটবল নির্বিঘ্নে উপভোগ করা গেলেও এর মাস কয়েক আগের সময়টা সুবিধার ছিল না। লোড শেডিংয়ের যন্ত্রণা ভুগিয়েছে দিনে রাতের অনেকটা সময়জুড়ে। কোভিডের ক্ষত কাটিয়ে ওঠার সেই সময়টাতে হঠাৎ এক যুদ্ধে যেন ওলটপালট হয়ে গেল সবই।

বৈশ্বিক অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের উত্তাপে চড়া হয়ে পড়া জ্বালানি দরের কারণে ২০২২ সালের বড় অংশ জুড়েই সেবাখাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল গ্যাস-বিদ্যুৎ আর জ্বালানি তেল, ভুগিয়েছেও বেশি।

বছরের শেষে বিদ্যুতের সংকট কিছুটা কাটছে; আর একেবারে শেষ দিকে পদ্মার ওপার থেকে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র রামপাল ও পায়রার বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়া জোগাচ্ছে আশা।

বিশ্ববাজারে নিম্নমুখী হয়ে পড়া জ্বালানির দাম নতুন বছরে গ্যাস সংকটেও সমাধানের পথ খুলে দেবে বলে আশা সরকারের নীতি নির্ধারকদের।

করোনাভাইরাস মহামারীর সংক্রমণ কমে লকডাউন উঠতে শুরু করলে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের অর্থনীতিও গতিশীল হতে থাকে, আমদানিও বাড়ে কয়েকগুণ। চাহিদা বাড়তে থাকায় বিশ্ব পণ্যবাজারও চড়তে থাকে। এতে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে টান পড়ে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে।

এর সঙ্গে মার্চে রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ পণ্যের সঙ্গে তাতিয়ে দেয় জ্বালানির বাজারও। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়, খোলা বাজারে এলএনজির দাম ছয়গুণেরও বেশি বেড়ে ইউনিটপ্রতি ৩৮ ডলার ছুঁয়ে যায়।

এসব কারণে সরকার চলতি বছরের জুন থেকে নতুন করে এলএনজি কেনা থেকে বিরত থাকে। এতে জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে গ্যাসের সংকট শুরু হয়; যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে রাশ টেনে ধরলে ফিরে আসে লোড শেডিং। 

Also Read: ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক ধাক্কায় ৪২.৫%; অকটেন ও পেট্রোলে ৫১% বাড়ল

Also Read: যুদ্ধের দামামায় তেলের ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়াল

শতভাগ বিদ্যুতায়ন

চলতি বছরের ২১ মার্চ পটুয়াখালীতে ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের সময় দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা আসে।

এ জেলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলায় নদীর তলদেশ দিয়ে (সাবমেরিন কেবল) বিদ্যুতের বিতরণ লাইন পারাপার করে সেখানে ২৫ হাজার পরিবারের মাঝে বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করার মাধ্যমেই এ লক্ষ্য অর্জনের কথা জানায় সরকার।

আরেক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপে একই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত হয়েছে কয়েক বছর আগেই। নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়াতেও স্থাপন করা হয়েছে ১৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র। এভাবেই দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তিকগুলো বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে।

সরকারি সংস্থা পাওয়ার সেলের হিসাবে, জাতীয় সঞ্চালন লাইন থেকে দেশে এখন ৪ কোটি ৩৯ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে ৬০ লাখ আবাসিক গ্রাহক সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা মেটাচ্ছেন। ২০০৯ সালে গ্রাহকের এ সংখ্যা ছিল এক কোটি ৮০ লাখ।

চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল পিক টাইমে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ডও করে বাংলাদেশ। ওইদিন এটাই ছিল বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা।

বিদ্যুতের এসব ভালো খবরের রেশ খুব বেশি দিন ধরে রাখা যায়নি বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম চড়তে থাকলে। এতে ডিজেলচালিত ভাড়াভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ করা হলে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য আর ঠিক থাকেনি।

গ্যাস সরবরাহেও টান

মহামারীর অচলাবস্থা ভেঙে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আবার সচল হতে শুরু করায় খোলা বাজারের এলএনজির চাহিদাও বাড়তে থাকে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি ইউনিট এলএনজি ৭ ডলারে বিক্রি হলেও তা বাড়তে বাড়তে ৪১ ডলারে পৌঁছে যায়।

একদিকে ডলার সংকট অন্য দিকে এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ায় গত জুনে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ করে দেয় সরকার।।

এর ফলে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস থেকেই দেশে চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহে টান পড়ে। চাহিদা ও যোগানের হিসাব মেলানো এবং শিল্প কারখানায় বাণিজ্যিক লাইনের গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়।

ফলে একই সঙ্গে গ্যাস সংকট দেখা দেয়, ফিরে আসে বিদ্যুৎ সংকটও। বছর শেষে শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসায় লোড শেডিং কমলেও গ্যাস সংকট এখনও রয়ে গেছে।

পেট্রোবাংলার হিসাবে, বছরের শুরুতে দেশি কূপ ও এলএনজি থেকে ২৮৩৭ এমএমসিএফডি গ্যাস মিলছিল। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনাল বা এফএসআরইউ থেকে আসছিল ৫৪১ এমএমসিএফডি গ্যাস।

বছরের শেষে ১ ডিসেম্বর মোট সরবরাহ ছিল ২৫৮৮ এমএমসিএফডি। এর মধ্যে এলএনজি মাত্র ৩৮০ এমএমসিএফডি। বছরের মাঝামাঝি সময়ে পরিস্থিতি ছিল আরও খারাপ।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ওমান ও কাতার থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট ৫৬ কার্গো (প্রতি কার্গোতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি আনা হয়েছিল। দাম চড়া হলেও খোলা বাজার থেকে কেনা হয়েছে আরও ১৮ কার্গো এলএনজি।

তবে দাম আরও চড়ার কারণে চলতি অর্থবছরে সরকার নতুন করে খোলা বাজার থেকে কোনো এলএনজি কেনেনি।

শুধু পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আলোকে যেসব এলএনজি আসার কথা ছিল সেগুলোই এসেছে। সেই হিসাবে গত ছয় মাসে কমবেশি নয় কার্গো এলএনজি কম এসেছে বল হিসাব বলছে। দেশে গ্যাস সংকটের এটিই বড় কারণ বলে সংশ্লিষ্টদের মত।

গ্যাস সংকটের কারণে জুলাই থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুরের রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাসহ কাঁচামাল ও জ্বালানি হিসেবে গ্যাস লাগে এমন সব কারখানায় উৎপাদন ব্যহত হয়।

এরমধ্যে উপায় না পেয়ে বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডারে সিএনজি গ্যাস রিফিল করে কারখানার বয়লার ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালাচ্ছেন অনেক মালিক। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে যায় প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট।

আলোচনায় ফের লোড শেডিং

গরমের সময় গ্যাস সংকট ও ডলার সাশ্রয়ে ডিজেলচালিত বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হলে প্রায় এক দশক পর বাংলাদেশে ঘোষণা দিয়ে ফিরে আসে লোড শেডিং।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ৭ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে জনগণকে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে লোড শেডিংয়ের ভোগান্তি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।

সেসময় রাত ৮টার মধ্যে দোকানপাট-শপিংমল বন্ধ করা, অফিস সময় কমিয়ে আনা, বাসা থেকে অফিস করা, সরকারি গাড়িতে অধিক সংখ্যক কর্মী পরিবহন, এসি বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় সরকার।

শিল্পাঞ্চলগুলোতে সপ্তাহের সাত দিন ভাগ করে সপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করে বিদ্যুতের ওপর চাপ কমানোর চেষ্টা হয়। এসব কিছুই তখন লোড শেডিংয়ের ভোগান্তিকে শৃঙ্খলায় আনতে পারেনি।

দিনে যতবার, যতক্ষণ বিদ্যুৎ থাকবে না বলে বিতরণ সংস্থাগুলো থেকে বলা হয়েছিল বাস্তবে বিদ্যুৎ গিয়েছে আরও বেশি; ফিরে এসেছে অনেক বিলম্বে।

পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরুতে বিদ্যুতের দৈনিক উৎপাদন ছিল ৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট থেকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ১৯৩ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু কাগজে কলমে তখন ছিল না কোনো লোডশেডিং। বরং ১২ হাজার ৪২২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের সক্ষমতা ছিল।

জুলাইয়ের শুরুতেও পরিস্থিতি ভালো ছিল। সন্ধ্যায় পিকে ১৩ হাজার ১২৬ মেগাওয়াট চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছিল।

পরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে। ১ অগাস্ট দেখা যায়, দিনে ১১৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সেদিন ১৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ৬২০ মেগাওয়াট।

সেপ্টেম্বরে গরম কমে শীত নামলে চাহিদা কমে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হলেও সেটা হয়নি। নভেম্বরের শেষে এসে বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কমেছে। ফলে লোড শেডিংও আস্তে আস্তে দূর হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের আশা, শীত কেটে যাওয়ার আগেই দেশের দুটি প্রধান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা ও রামপাল থেকে নিয়মিত বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

বছরের শেষ দিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় সঞ্চালন লাইন বসে যাওয়ায় এ দুই বৃহৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আসতেও শুরু করেছে।

আবার ভারতের আদানি গ্রুপের আমদানি বিদ্যুৎও আসা শুরু হবে। ফলে আগামীতে বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তি হয়ত এতটা আর থাকবে না বলে অনেকেরই আশা।

বিদ্যুতের গ্রিড বিপর্যয়

লোড শেডিংয়ের ভোগান্তির মধ্যে এক মাসের ব্যবধানে পরপর দুইবার বিদ্যুতের জাতীয় সঞ্চালন লাইনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত ৪ অক্টোবর দুপুরে সঞ্চালন লাইনের পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের সংযোগস্থল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে দুই প্রান্তের ভারসাম্যহীনতায় দেখা দেয় গ্রিড বিপর্যয়।

একের পর এক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চলমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো একের পর এক বন্ধ হতে থাকলে সেদিন রাজধানী ঢাকাসহ অনেক এলাকা প্রায় আট ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।

বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না, হাসপাতালে চিকিৎসা, কারখানায় উৎপাদন সবকিছুই ব্যহত হয়েছিল। এর মাস খানেক আগেও জাতীয় সঞ্চালন লাইনে বিপর্যয় ঘটে গিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছিল।

দেশেও জ্বালানি তেলের দামে রেকর্ড

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দামে ঊর্ধ্বগতির কারণ দেখিয়ে এবছর পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল-কেরোসিনের রেকর্ড পরিমাণ দাম বাড়িয়েছে সরকার। এক লাফে জ্বালানির দাম এতটা এর আগে কখনও বাড়ানোর তথ্য দিতে পারেননি খাত সংশ্লিষ্টরা।

গত ৫ অগাস্ট লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। পেট্রোলে ৫১.১৬% বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৫১.৬৮% বাড়িয়ে করা হয় ১৩৫ টাকা।

জ্বালানির এমন মূল্য বাড়ানোর ফলে গণপরিবহন ভাড়াসহ জীবনযাত্রার সব ধরনের ব্যয় যায় বেড়ে।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে এর ২৩ দিনের মাথায় লিটারপ্রতি ৫ টাকা করে কমানো হয়। ফলে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এখন প্রতি লিটার ১০৯ টাকা, পেট্রোলের দাম ১২৫ টাকা এবং অকটেনের দাম ১৩০ টাকা।

বাড়ল গ্যাস-বিদ্যুতের দামও

বিদায়ী বছরে দাম বাড়ানোর তালিকায় পিছিয়ে থাকেনি লাইনের গ্যাসও। গত ৫ জুন পাইপলাইনে সরবরাহ করা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের পাইকারি দাম ৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়িয়ে ১১ টাকা ৯১ পয়সা করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

খুচরা পর্যায়ে সেই মূল্য সমন্বয় করে যানবাহনে ব্যবহারের সিএনজি বাদে সব পর্যায়েই গ্যাসের খরচ বাড়ে।

পরে রান্নার গ্যাসের দুই চুলার (ডাবল বার্নার) মাসিক বিল ৯৭৫ থেকে বাড়িয়ে ১০৮০ টাকা এবং এক চুলার মাসিক বিল ৯২৫ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৯৯০ টাকা। বাসাবাড়ির প্রিপেইড মিটারসহ বাণিজ্যক সব পর্যায়ে প্রতি ইউনিটের দাম বাড়ানো হয়।

মূল্য বাড়ানোর দৌড়ে পিছিয়ে ছিল না বিদ্যুৎখাতও। বছরের শেষ দিকে এসে ২১ নভেম্বর পাইকারি বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা করা হয়েছে।

একদিন পরই খুচরা পর্যায়ে বাড়তি দাম সমন্বয় করে মূল্য বাড়াতে বিইআরসির কাছে আবেদন নিয়ে আসতে থাকে বিতরণ সংস্থাগুলো।