“এবার পছন্দের অনেক লেখক নেই মেলায়। বইয়ের সংখ্যাও কম। মেলায় সিসিমপুরও নেই। কেমন জানি, প্রাণ নেই।”
Published : 28 Feb 2025, 04:44 PM
বইমেলায় শেষ শুক্রবারের ছুটির দিন, সকাল থেকেই অভিভাবকদের সঙ্গে আসা শিশু-কিশোরদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে মেলার শিশুচত্বর। তবে এবারের মেলায় সিসিমপুর না থাকায় সমাপনী শিশুপ্রহর ছিল অনেকটা প্রাণহীন।
শেষ দিন শুক্রবার বেলা ১১টায় খোলে বইমেলার দুয়ার। দুপুর ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। মাস পেরিয়ে আসা মেলার শেষ দিনে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টলে বিক্রয়কর্মীদের চেহারায় ছিল ক্লান্তির স্পষ্ট ছাপ।
ধানমন্ডি থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বইমেলায় এসেছিল সামিহা আনজুম। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া সামিহা মায়ের সঙ্গে সেলফি তুলছিল। এবার মেলায় সিসিমপুর না থাকায় মন খারাপ হওয়ার কথা জানায় সে।
সামিহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “প্রতিবছরই বইমেলায় আসি, কিছু বইও কিনি। তবে এবার পছন্দের অনেক লেখক নেই মেলায়। বইয়ের সংখ্যাও কম। মেলায় সিসিমপুরও নেই। কেমন জানি, প্রাণ নেই।”
প্রকাশনা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক লেখকই এবার মেলায় আসেননি।
পঙ্খীরাজের প্রকাশক দেওয়ান আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার সামগ্রিকভাবেই মেলা হতাশ করেছে। আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।”
মেলার শিশু চত্বরটি এবার আরও রঙিন করে সাজানো হয়েছে খুদে পাঠকদের জন্য। বাংলা একাডেমির উল্টো দিকের প্রবেশ পথ দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করলেই হাতের ডান দিকে চোখে পড়বে শিশু চত্বর লেখা প্রবেশ পথ।
মেলার ভেতরে যেতেই চোখে পড়ে শিশুদের ছোটাছুটি। এ বছর শিশু চত্বরে শিশুদের জন্য ৭৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২০টি ইউনিটের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই চত্বরের বাইরেও শিশুতোষ বইয়ের কিছু প্রকাশনীর স্টল রয়েছে।
শিশুতোষ বইয়ের কয়েকটি প্রকাশনীর স্টলের বিক্রয়কর্মীরা জানিয়েছেন, বিক্রি আশানুরূপ হয়নি।
দোলনের প্রকাশক কামাল মুস্তাফা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বইমেলা নিয়ে আগামী বছর আরও ভাবা উচিত।
“প্রতি বছরই মেলায় স্টল বাড়ানো হচ্ছে, মান যাচাই করা হচ্ছে না। এতে করে মেলা মানহীন হয়ে যাচ্ছে। মানসম্পন্ন প্রকাশনীকে নিয়েই বইমেলা হওয়া উচিত।”
জুলাই-অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মেলা কেমন হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকায় বিনিয়োগ করতে শঙ্কায় ছিলেন কোনো কোনো প্রকাশক।
পঙ্খীরাজ এবার এনেছে দেওয়ান আজিজের ‘মাটির ময়না ও হিম বাতাসের গল্প’ এবং ‘ছোটদের সেরা জোকস’সহ কয়েকটি বই।
ময়ূরপঙ্খী এনেছে তাহমিনা রহমানের ‘চকলেটের পাহাড়’, হাসান হাফিজের ‘পিঁপড়াবাহিনী ও ঘাসফড়িং’, ফারজানা তন্নীর ‘নতুন বন্ধু’, রাজিয়া সুলতাবার ‘বাবির গাড়ি বুম বুম’।
শিশুচত্বরে আছে শব্দশিল্প প্রকাশন, ঝিঙেফুল, শিশুরাজ্য, ফুলঝুড়ি, পঙ্খীরাজ, শিশুবেলা, চিরন্তন প্রকাশ, শৈশব প্রকাশ, কাকাতুয়াসহ বিভিন্ন প্রকাশনী। আছে বাংলা একাডেমির শিশুতোষ বইয়ের স্টলও।