এবার শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারেই ‘বেইন বুনন’

শুক্রবার বিকাল ৪টার মধ্যে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর দান করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2023, 03:35 PM
Updated : 16 Nov 2023, 03:35 PM

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দানোৎসব ঘিরে ঢাকার মিরপুরে শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারে প্রথমবারের মত ‘বেইন বুনন’ আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে শতাধিক পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে ‘বেইনঘর' উদ্বোধন করেন শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই চীবরদান নিয়ে সূচনা সংগীত পরিবেশন করেন নূপুর চাকমা, রিতাসহ অনেকে। পরে ত্রিসরণসহ পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন বাবু সোনাকান্তি খীসা।

শুক্রবার বিকাল ৪টার মধ্যে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর দান করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হবে। এ আয়োজনে বুদ্ধমূর্তি দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান করা হবে। সকালে বৌদ্ধ পূজাও হবে।

ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই বুনন কার্যক্রম পার্বত্য অঞ্চলের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর অনেক বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি ধারাবাহিকতা। সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে এই আয়োজনটি হচ্ছে।

“বেইনঘরে নারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর বুনন সম্পন্ন করবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুতা থেকে বস্ত্র তৈরি করা এবং চীবরে উন্নীত করে রঙ রঞ্জন করা এবং শুকিয়ে সেলাই করে চীবর তৈরি সম্পন্ন করা হবে। পুরো কাজটি এই অল্প সময়ে করা হয়। এটি কঠিন কাজ।"

এটি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার শিক্ষাও দেয় উল্লেখ করে ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের বলেন, “আমাদের মেয়েদের প্রায় সবাই এই কাজটি জানে এবং এই কাজটি না জানলে সে বিয়ের জন্য উপযুক্ত নয় বলেও বিবেচনা করা হয়।"

কঠিন চীবর দানকে শ্রেষ্ঠ দান হিসেবে বিশ্বাস করে পুণ্যার্থীরা। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাউপাসিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা এবং সুতা রঙ করে কাপড় বুনে তা সেলাই করে চীবর (ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র) দান করে এ উৎসবের সূচনা করেন। 

এ পদ্ধতিতে দান করলে কায়িক-বাচনিক-মানসিকভাবে অধিক পরিশ্রম হয় এবং অধিকতর পূণ্যলাভ হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় অবস্থানরত পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ দায়ক-দায়িকা, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পুণ্যার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার থেকে আগত গুণোত্তম ভিক্ষুসংঘ উপস্থিত ছিলেন।