প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বর্তমানে সাতজন বিচারপতি রয়েছেন।
Published : 08 Aug 2024, 03:51 AM
প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতিদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা এ প্ল্যাটফর্ম।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এতে 'ফ্যাসিবাদকে' সমর্থনকারী বিচারপতিদের সরে যেতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিটি সাংবাদিকদের হোয়াইটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রচার করেছেন আরেক সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন।
সমন্বয়কদের মধ্যে নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক তাদের ফেইসবুক আইডি থেকে বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করেছেন।
বর্তমান গণ আন্দোলনকে তারা নসাৎ করার চেষ্টা করছেন দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের অপসারণেরও দাবি করা হয়।
এদিন রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকাজ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
এর কয়েক ঘণ্টা পরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিচারপতিদের নিজে থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান এল।
প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বর্তমানে সাতজন বিচারপতি রয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচিতেই ছাত্র-জনতার তুমুল গণ আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে গত সোমবার পতন ঘটে শেখ হাসিনার। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরদিন মঙ্গলবার ভেঙে দেওয়া হয় দ্বাদশ সংসদও।
বিচারপতিদের উদ্দেশে বুধবার মধ্যরাতে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, বিচার বিভাগে এখনো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার শরিক বিচারপতিরা বিচরণ করছেন। আমরা শুনতে পেলাম, অভ্যুত্থানের আগে আমাদের যেভাবে আদালতের নামে টালবাহানা করা হত, ঠিক একই কায়দায় অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র-জনতার সরকার ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলমান।
"আমরা অচিরেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সক্রিয় শরিক প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতিবৃন্দের অপসারণ দাবি করছি।"
এতে বলা হয়, “অনতিবিলম্বে দেশপ্রেমিক এবং জনগণের পক্ষের বিচারপতিদের উক্ত শুন্য পদসমূহে নিয়োগ করে দেশে ছাত্র-জনতার সরকার প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম দ্রুততর করা হোক।
"আশা করব সকালের মধ্যেই বিচারপতিগণ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। অন্যথায় আমাদের কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে হবে।"
বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিচারবিভাগকে স্বাধীন ও কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া দেশের সকল পর্যায়ে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী, সহযোগীদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়।
আন্দোলনকারীদের এ দাবির আগে হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ‘স্বপ্নের দেশ গঠনে’ ছয়টি প্রস্তাব দেন।
বুধবার নিজের ফেইসবুক আইডিতে প্রকাশ করা এ পোস্টে তিনি বলেন, এসব প্রস্তাব স্বপ্নের দেশ গঠনে প্রয়োজন হবে।
তার এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে বিচারপতি নিয়োগে দলনিরপেক্ষ আইন প্রণয়ন করা এবং হাই কোর্ট বিভাগের বেঞ্চ গঠনে প্রধান বিচারপতির একচ্ছত্র ক্ষমতায় চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের ব্যবস্থা রাখা।
আরও পড়ুন
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ স্থগিত
শিক্ষার্থীদের প্রতি ফেইসবুক পোস্টে এক বিচারপতির ৬ প্রস্তাব
কোনো দলের আকাঙ্ক্ষা পূরণে হয়নি এ আন্দোলন: সমন্বয়ক আসিফ