আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশ শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যার দিকে গোলাপ শাহর মাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
Published : 28 Jul 2023, 08:37 PM
আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশ শেষ ঢাকার গুলিস্তানে দুইপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও চারজন।
শুক্রবার বিকালে বায়তুল মোকাররম এলাকায় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ সমাবেশ শেষ হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে আধা কিলোমিটার দূরে গোলাপ শাহর মাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দীন মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগের সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে ছুরিকাঘাতের ওই ঘটনা ঘটে।”
সে সময় রাস্তায় থাকা নেতাকর্মীরা দোড়াদৌড়ি শুরু করেন। এক পর্যায়ে এক পক্ষের ধাওয়ায় অন্য পক্ষ সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের দিকে চলে যায়। শান্তি সমাবেশের মাইকে তখন বলতে শোনা যায়, “আপনারা শৃঙ্খলা বজায় রাখুন, কোনো বিশঙ্খলায় জড়াবেন না।”
দুইপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পাঁচজন ছুরিকাহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
নিহত তরুণের নাম রেজাউল করিম, বয়স ২১। তিনি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার পশ্চিম নারায়ণখোলা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
আহত চারজন হলেন- মো. আরিফুল (১৮), জোবায়ের (১৮), রনি (৩২) ও মোবাশ্বের (২৮)। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি (জরুরি বিভাগ) বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আলাউদ্দীন।
শাহবাগ থানার এসআই আব্দুল মান্নাফ জানান, শুরুতে রেজাউলের পরিচয় জানা যাচ্ছিল না। তার লাশ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছিল। পরে সিআইডি আঙুলের ছাপের মাধ্যমে তার পরিচয় জানতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা ২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের লোকজন ওই মারামারিতে জড়ায়।
শাহীন চেয়ারম্যান দাবি করেন, এই ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন, তারা তার অনুসারী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেছেন, তার কোনো কর্মী ওই মারামারিতে জড়িত ছিল না।
শাহীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলন, "সমাবেশ শেষে আমার লোকজন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়, তখন পেছন থেকে এমপি কামরুল ইসলামের লোকজন হামলা করে, এতে আমার অনেক লোক আহত হয়েছে, একজন মারা গেছে শুনে আমি ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। আর উনার লোকজন যে হামলা কেরেছে সেটা সবাই দেখেছে, ড্রোন উড়তে ছিল তখন, সব প্রমাণ আছে।”
আর কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কিশের মারা গেছে, কে মারা গেছে। আর আমার লোকজন কোনো হামলায় ছিলো না। আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না।"
আহতদের মধ্যে জোবায়ের হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেছেন, তার বাসা বংশালে। সেখানে একটি স্কুলে তিনি অষ্টম শ্রেণীতে পড়েন।
পেটে ছুরির জখম নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই কিশোর দাবি করেছেন তিনি ‘মোবাইলের কভার কিনতে’ গুলিস্থানে গিয়ে মারামারির মধ্যে পড়ে যান। আহত অন্যদের তিনি ‘চেনেন না’।
আহত রনির বাসা কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকায়। তার বুকে ছুরি লেগেছে। নিজেকে তিনি কেরানীগঞ্জ যুবলীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
আরিফুলের পায়ে ছুরির আঘাত লেগেছে। গুলিস্তান এলাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন বলে তার ভাষ্য।
মোবাশ্বের এর গায়ে লেগেছে ছুরির আঘাত, তিনি নিজেকে আরামবাগ এলাকার দিনমজুর হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।