“গ্রেপ্তারের সময় তাদের মাথায় কোনো আঘাত বা ব্যান্ডেজ পাইনি; তাদের ব্যান্ডেজ ছাড়া ছবিও দিয়েছি,” বলেন ওসি।
Published : 16 Jan 2025, 11:48 PM
ঢাকায় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর আরিফ ও আব্বাস নামে দুজনের মাথায় ব্যান্ডেজ পরা দেখা গেলেও তাদের গ্রেপ্তারের পর কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি পুলিশ।
ঢাকার মতিঝিলে পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে বুধবার আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ব্যাপক মারধরের অভিযোগে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে তাদের কপাল ও মাথার অংশে ব্যান্ডেজ পরা দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার রাতে মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত রাতে (বুধবার) আমরা দুজনকে গ্রেপ্তারের সময় তাদের মাথায় কোনো আঘাত বা ব্যান্ডেজ পাইনি। আমরা তাদের ব্যান্ডেজ ছাড়া ছবিও দিয়েছি।”
‘সুস্থ অবস্থাতেই’ দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ ব্যানারে অবস্থান নেওয়াদের ওপর হামলা চালায় চিত্রকর্মটি বাদ দেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেওয়া ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন।
ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে রাতেই দুই 'হামলাকারীকে' গ্রেপ্তারের তথ্য দেওয়া হয় সরকারের দুই উপদেষ্টার তরফ থেকে।
এদিকে হামলা-মারধরের ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজু ভাষ্কর্যের সামনে অবস্থান নেন। তারা হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার দাবি তোলেন।
সেখান থেকে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ঘেরাও’ করতে গেলে শিক্ষা ভবনের সামনে পুলিশ তাদের ওপর জলকামান থেকে পানি ছুঁড়ে ও লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিবাদে বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়। সেখানে কর্মসূচি চলাকালে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করা হয়।
আরও পড়ুন-
বইয়ে 'আদিবাসী চিত্রকর্ম': হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
বইয়ে 'আদিবাসী চিত্রকর্ম': পক্ষের লোকজনকে পেটাল বিরোধীরা
পাঠ্যবই থেকে 'আদিবাসী চিত্রকর্ম' বাতিলের প্রতিবাদ চিত্রকর্মেই