“পূর্বেকার কোটা ব্যবস্থার যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবসম্মত সংস্কার হতে পারে, যাতে নতুন প্রজন্মের সত্যিকার মেধাবীরা বঞ্চিত না হয়,” বলেছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম।
Published : 11 Jul 2024, 06:57 PM
চাকরিতে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার ‘যুক্তি ও বাস্তবসম্মত’ সংস্কার করা যেতে পারে মনে করছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ'৭১।
মুক্তিযোদ্ধাদের এ সংগঠনটি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পার হওয়ার পর পূর্বেকার কোটা ব্যবস্থার যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবসম্মত সংস্কার হতে পারে, যাতে নতুন প্রজন্মের সত্যিকার মেধাবীরা বঞ্চিত না হয়।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। পরে গত ৫ জুন কোটা পুনর্বহাল করে রায় দেয় হাই কোর্ট।
এ রায়ের পর থেকেই আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। ঘোষণা দেন ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি। প্রথমে চার দফা নিয়ে মাঠে নামলেও এখন কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে তারা অনড়।
সড়ক অবরোধ করে তাদের আন্দোলনের কারণে রাজধানীতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা; সড়কে কমে গেছে গণপরিবহন।
আন্দোলনের মধ্যে বুধবার কোটা নিয়ে সব পক্ষকে ৪ সপ্তাহ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। তবে বৃহস্পতিবারও সড়কে নেমেছেন আন্দোলনকারীরা।
কোটার পক্ষে যুক্তি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ'৭১ বলেছে, “জীবনবাজি রেখে যারা স্বাধীন বাংলাদেশ গঠন করেছিলেন, তাদের সিংহভাগ ছিলেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, যারা কয়েক যুগ ধরে উপেক্ষিত ও অবহেলিত থেকেছেন।
“কিছু উন্নয়নের পরেও জনসংখ্যার অর্ধেক নারী সমাজ আজও পিছিয়ে আছে। পিছিয়ে আছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও শারীরিক প্রতিবন্ধিরা। অতএব রাষ্ট্রের চাকরি ক্ষেত্রে তাদের সকলের জন্য বিবেচনাপ্রসূত হারে কোটা ব্যবস্থা অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত।”
পঁচাত্তরের পর মুক্তিযোদ্ধারা বহুক্ষেত্রে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ'৭১।
সংগঠনটির ভাষ্য, “ওই সময়ে সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন কোটাবিরোধী আন্দোলনে স্বাধীনতা বিরোধীদের অনুপ্রবেশ ঘটলে এবং মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন করলে তা হবে চরম দুর্ভাগ্য ও উদ্বেগজনক।”
২০১৮ সালে সব ধরনের কোটা বাতিলের পরিপত্র জারি ‘বিবেচনা প্রসূত’ ছিল না বলেও মনে করে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম।