‘স্বনির্ভর’ হতে স্থায়ী তহবিল গড়বে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

অনুদান দাতাদের নাম জাদুঘর ভবনে প্রদর্শিত হবে স্থায়ীভাবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2023, 05:09 PM
Updated : 20 May 2023, 05:09 PM

মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে স্থায়ী তহবিল সংগ্রহ করতে চাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

শনিবার বিকালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মিলনায়তনে অনুদান গ্রহণের জন্য এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়, যেখানে অনুদান দাতাদের সম্মাননা দেওয়া হয়।

জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী মনে করেন, জাতিগত বা ধর্মীয় বিদ্বেষের বিপরীতে মানবিক প্রজন্ম গড়তে তৃতীয় প্রজন্মের দায় রয়েছে।

“এই দায় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর গড়ে ওঠেছিল। এই জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মনে করে, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ প্রয়োজন। আমরা চাইছি জাদুঘরটা স্বনির্ভর হোক।”

বর্তমান ৩০ কোটি টাকার তহবিল রয়েছে জানিয়েছে জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের বলেন, “আমরা ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছি। যাতে এটার ইন্টারেস্ট থেকে আমরা আমাদের অনুষ্ঠানগুলো চালিয়ে যেতে পারি, যাতে করে আমাদের দুর্বল জায়গায় থাকতে না হয়। হয়তো সরকার নিয়ে নিল- এমন যাতে না হয়।

“আমরা যাতে স্বাধীন থাকি সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা সকলে মনে করি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর জনগণের, যেমন মুক্তিযুদ্ধটা জনমানুষের।”

১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ সেগুনবাগিচার একটি ভাড়া বাড়িতে শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যাত্রা। পরে তা স্থানান্তর করা হয় আগারগাঁওয়ের বর্তমান ঠিকানায়। বর্তমানে জাদুঘরের সংগ্রহশালায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ১৫ হাজারের বেশি স্মারক।

সেই প্রসঙ্গ টেনে ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, “এই জাদুঘরটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বৃহত্ততম তথ্য ভান্ডারে পরিণত হয়েছিল। সেই তথ্য ভান্ডার এবং স্মারক রক্ষা করা কঠিন ছিল। প্রয়োজন ছিল বড় পরিসরের।”

জাদুঘর নির্মাণের এই যাত্রায় যারা নানাভাবে অংশ নিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। 

বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মারক সংরক্ষণে গড়ে তোলা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পেছনে গণমানুষের সম্পৃক্ততা থাকার কথা জানান আরেক ট্রাস্টি ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।

তিনি বলেন, “জাদুঘরটিকে প্রতিষ্ঠা করেছে, সেটি বড় কথা নয়; এটি এদেশের জাদুঘর, সাধারণ মানুষের জাদুঘর। সবাই যেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে সে চেষ্টা সবসময় ছিল।

“আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন এই জাদুঘর থেকে সেই সচেতনতা অর্জন করে, একটি জাতি যখন স্বাধীন হতে চায়, তাকে স্বাধীন হতে দিতে হবে। একটি জাতি যখন স্বাধীন হতে চায়, তখন তার উপর নিপীড়ন চলবে না। এই সচেতনতাটা যত বেশি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারব, কাজটা তত সার্থক হবে।”

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থায়ী তহবিল গড়তে অংশ নিতে পারবে দেশের সবশ্রেণির নাগরিক। ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে কেনা যাবে প্রতীকী ইট।

তাছাড়া সাধারণ সদস্য হতে ২৫ হাজার, আজীবন সদস্য হতে ১ লাখ টাকা, উদ্যোক্তা সদস্য হতে ৫ লাখ টাকা, স্থাপনা সদস্য হতে ১৫ লাখ এবং পৃষ্ঠপোষক সদস্য হতে ৫০ লাখ টাকা অনুদান দিতে পারবেন যেকোনো বাংলাদেশি। অনুদান দাতাদের নাম জাদুঘর ভবনে প্রদর্শিত হবে স্থায়ীভাবে।