গ্রেপ্তার মা-মেয়ে পেশাদার চক্রের সদস্য, তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন আছে, বলছে পুলিশ।
Published : 08 Apr 2025, 10:54 PM
অপহরণের গল্প সাজিয়ে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ দাবির অভিযোগে মা-মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিউ মার্কেট থানার এক মামলায় সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, তারা একটি পেশাদার চক্রের অংশ। অপহরণ ও ধর্ষণ চেষ্টার মত গল্প সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তারা অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
নিউ মার্কেট থানার ওসি মোহসেন উদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এরা একটা প্রফেশনাল চক্র। এই মা-মেয়ের সঙ্গে আরও কয়েকজন আছে। আমরা তাদের খুঁজছি। এর আগেও তারা এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত তাদের এরকম তিনটি কেইস সম্পর্কে জানতে পেরেছি।”
ওসি বলেন, “এরা কাউকে টার্গেট করার পর প্রথমে একটা ফাঁদ পাতে বা গল্প সাজিয়ে কিছু টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। সেটাতে ব্যর্থ হলে তারা অপহরণ বা ধর্ষণ চেষ্টার মত ঘটনা সাজায়। তাদের করা এর আগের ধর্ষণ চেষ্টার মামলাও আমরা খুঁজে বের করেছি।”
ঢাকা মহানগর পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, অপহরণ নাটক সাজিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে নিউ মার্কেট থানায় মামলা করেন এলিফ্যান্ট রোডের ঘড়ি ব্যবসায়ী সৈকত আলী। এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সৈকতের দোকানে সেই মা-মেয়ে ঘড়ি কিনতে আসেন। সেখানে সৈকতের স্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তারা পরে মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। ২০ মার্চ ফের দোকানে এসে আর্থিক দুর্দশার কথা বলে মেয়েকে সৈকতের দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ দেওয়ার কথা বলেন ওই নারী। আর তাতে রাজি হন সৈকত।
তবে মেয়েটির আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় ২২ মার্চ তাকে কাজে আসতে নিষেধ করে সৈকত। এরপরও পরদিন দোকানে আসে মেয়েটি এবং কিছুক্ষণ অবস্থান করে অসুস্থতার কথা বলে বাসায় যেতে চান। বিকাল ৫টার দিকে মেয়েটিকে বাসে তুলে দেন সৈকত। তবে রাত ৮টার দিকে মেয়েটির মা ফোন করে বলেন তার মেয়ে বাসায় ফেরেনি। কিছুক্ষণ পর সৈকতকে আবার ফোন করে ওই নারী বলেন, তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে এবং ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাইছে। দোকানে কাজে গিয়ে মেয়ে না ফেরায় সৈকতের কাছে টাকা দাবি করেন ওই নারী।
এজাহারের বরাতে পুলিশ বলছে, পরদিন দুপুরে মেয়েটি ফিরে এসে বলে সে পালিয়ে এসেছে। এরপর অপরিচিত নম্বর থেকে সৈকতের স্ত্রীকে ফোন করে বলা হয় অপহরণকারীরা মেয়েটির মাকে আটকে রেখেছে। তাকে ছাড়াতে ২০ লাখ টাকা না দিলে সৈকতের ব্যবসার ক্ষতি হবে।
এ ঘটনায় সৈকত পুলিশের দ্বারস্থ হলে মা-মেয়ে ধরা পড়েন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকারও করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।