আমাদের মানবাধিকার কোথায়? প্রশ্ন শেখ হাসিনার

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, “আর আমাদেরকে মানবতার সবক শেখায় যারা সেই আমার বাবা, মা, নারী, শিশু ওদেরকে হত্যা করেছে। তাদেরকে তারা রক্ষা করে।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 03:38 PM
Updated : 16 August 2022, 03:38 PM

জাতির পিতার খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকলেও দেশটি তাকে ফেরত না দিয়ে লালন পালন করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে তারাই খুনিদের রক্ষা করছে।

মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “আমাদের মানবাধিকার কোথায়? তার কি জবাব আমরা পাব?”

শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে যেসব দেশ মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে আমাদের স্যাংশন দেয় তারা তো খুনিদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। এই খুনি রাশেদ, এই রাশেদ ছিল কমান্ডিং অফিসার।

“মিন্টো রোডে যে অপারেশন হয়, সেই অপারেশনে কমান্ডিং অফিসার ছিল এই রাশেদ। সেই ওখানে যায়। রাশেদ এবং শাহরিয়ার এদের নেতৃত্বে সেখানে যায় এবং মাজেদ।”

“মাজেদকে আমরা আনতে পেরেছি। কিন্তু রাশেদকে বারবার আমেরিকার সাথে আমরা কথা বলেছি। এখনো তাকে তারা দিচ্ছে না। তাকে তারা লালন-পালন করে রেখে দিচ্ছে।... আর নূর কানাডায়।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।

অনেক বাধা পেরিয়ে সেই মামলার রায়ে দণ্ডিতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ছয় জনের ফাঁসি কার্যকর হলেও পাঁচ খুনি এখনও রয়েছে অধরা। তারা হলেন- আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও এবিএমএইচ নূর চৌধুরী।

এর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের বারবার দাবির পরও তাদের ফেরত পাঠানো হয়নি।

দু’বছর আগে জানা যায় রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত সে দেশের সরকার পর্যালোচনার উদ্যোগ নিচ্ছে। ওই বছরই রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সেই উদ্যোগের কোনো অগ্রগতি এখন পর্যন্ত নেই।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “এদের কাছ থেকে এখন আমাদেরকে মানবতার সবক নিতে হয়। আর আমাদেরকে মানবতার সবক শেখায় যারা সেই আমার বাবা, মা, নারী, শিশু ওদেরকে হত্যা করেছে। তাদেরকে তারা রক্ষা করে।

“ওরা সেই লিবিয়াতে পড়ে থাকে, মাঝে মাঝে পাকিস্তানে যায়। ডালিমের খোঁজ পাকিস্তানের লাহোরে আছে এইটুকু জানি। কিন্তু খুব বেশি খবর পাওয়া যাচ্ছে না।”

নাম-পরিচয় পাল্টে ফেলায় খুনি মোসলেম উদ্দিনের কোনো খোঁজ মিলছে না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই কয়জনকে আমরা আনতে পারিনি এখনো। বাকি সব খুনিদের একে একে আমরা নিয়ে এসেছি।”

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাধার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, “যারা খুনিদের লালন-পালন করল অর্থাৎ যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, খুনি, জঙ্গি, সন্ত্রাসী তাদের মানবাধিকার নিয়ে এরা ব্যস্ত।

“আর বিএনপি তো এদের মদদদাতা। বিএনপি এদের লালন পালনকারী। কাজেই তাদেরকে তারা লালন-পালন করে।”

আলোচনাসভায় অন্যান্যের মধ্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলির সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মো. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্র ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।