খুনি রাশেদের প্রত্যর্পণ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ‘গেম-চেঞ্জার’ হতে পারে

'বঙ্গবন্ধুর খুনির যুক্তরাষ্ট্রে অব্যাহত অবস্থান দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক।'

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 10:07 AM
Updated : 16 August 2022, 10:07 AM

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার ঘটনাটি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

রাশেদ চৌধুরীকে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে মার্কিন সরকারের ‘আন্তরিক’ সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ৪৭তম বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবসে সোমবার ওয়াশিংটন ডি.সিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সেমিনারে সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা অংশ নেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর খুনির যুক্তরাষ্ট্রে অব্যাহত অবস্থান দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যজনক। রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘গেম-চেঞ্জার’ হবে।“

দুই দফায় ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর হলেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাকি পাঁচ খুনি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তাদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক আছেন।

দু’বছর আগে জানা যায় রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত সে দেশের সরকার পর্যালোচনার উদ্যোগ নিচ্ছে। ওই বছরই রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সেই উদ্যোগের কোনো অগ্রগতি এখন পর্যন্ত নেই।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘাতকের বহিষ্কার: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের দীর্ঘদিনের একটি ইস্যু’ শিরোনামে সেমিনারটিতে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শহিদুল ইসলাম।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “সেমিনারটির মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে (রাশেদ চৌধুরী) ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মার্কিন জনগণ এবং প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।”

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ ক্যারোলিনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবিএম নাসির। তিনি বলেন, “খুনি রাশেদ চৌধুরী তিন শিশু, অন্তঃসত্ত্বা দুই নারী ও অন্যান্য নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।“

সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার। এছাড়া অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, সংবাদপাঠক সরকার কবির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা হারুন চৌধুরী, দূতাবাসের কাউন্সেলর আরিফা রহমান রুমা এবং মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল আজম আজাদ বক্তব্য দেন।

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু করে দূতাবাস। এসময় বাজানো হয় জাতীয় সঙ্গীত। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো এবং ১৫ অগাস্টে অন্যান্য শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনীতির উপর আয়োজিত ১৭ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন প্রতিরক্ষা অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম, মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন, মিনিস্টার (পলিটিক্যাল-১) দেওয়ান আলী আশরাফ এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল-২) মো. রাশেদুজ্জামান।

শোক দিবসের সকাল-বিকেল দুবেলা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাউন্সেলর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং কাউন্সেলর ও হেড অব চ্যান্সারি মো. মাহমুদুল ইসলাম।