“বাংলাদেশের মত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সম্পদ ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে বাধ্য করা হচ্ছে।”
Published : 28 Mar 2025, 12:03 AM
মুনাফার চেয়ে ‘মানুষ ও পৃথিবীকে’ বেশি অগ্রাধিকার দিতে বিশ্বকে ‘অবশ্যই টেকসই অর্থনৈতিক মডেলের’ দিকে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে তিনি বলেন, “মানুষ আত্মঘাতী অর্থনৈতিক মূল্যবোধকে ধারণ করে চলা অব্যাহত রেখেছে। এ কারণে মানবসভ্যতা ঝুঁকিতে পড়েছে।
“আমাদের অবশ্যই টেকসই অর্থনৈতিক মডেলের দিকে অগ্রসর হতে হবে, যা মুনাফার চেয়ে মানুষ ও পৃথিবীকে অগ্রাধিকার দেয়।”
এবছর বিএফএ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘এশিয়া ইন দ্য চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড টুওয়ার্ডস আ শেয়ারড ফিউচার’।
বাসসের খবরে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ভাষণ দেন সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে।
সেখানে তিনি বলেন, “আধিপত্যশীল অর্থনৈতিক মডেল সীমাহীন ভোগের ওপর নির্ভরশীল এবং প্রবৃদ্ধির নামে তা সম্পদের অতিরিক্ত উত্তোলন ও পরিবেশগত অবক্ষয়কে ন্যায্যতা দেয়।”
জলবায়ু সংকট মানবতার জন্য অস্তিত্বগত হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু দুর্যোগজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি ইতোমধ্যেই বিশাল, যা প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সম্পদ ব্যবহার করে দুর্যোগ মোকাবেলা করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ সীমিত করে দিচ্ছে।
“আমাদের নতুন, অতিরিক্ত, সহজলভ্য, বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগিতা, ঋণ-সৃষ্টিকারী নয় এমন অনুদানভিত্তিক জলবায়ু অর্থায়ন প্রয়োজন, যা অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিত করে।”
সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও প্রযুক্তির সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ।
তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা ছিল, যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিদ্যমান গভীর বৈষম্যসমূহ তুলে ধরেছে।”
প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তথ্যচালিত প্রযুক্তি, রোবটিক্স, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত অগ্রগতি ক্রমে বিশ্বকে ভিন্ন একটি রূপ দিচ্ছে।
“উন্নত বিশ্বের তুলনায় এশিয়ার কম সক্ষমতা, সামর্থ্য ও সম্পদ স্থানান্তর ডিজিটাল বৈষম্যকে আরও বিস্তৃত করতে পারে।”
তথ্যের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে গভীর উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যদি দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে প্রযুক্তি বিকশিত হয়, তাহলে তা অস্তিত্বগত ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
“এশিয়াকে অবশ্যই ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে হবে এবং প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও ইনকিউবেশনে আঞ্চলিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।”