চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবি মেনে নিতে বাগান মালিক ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
পাশাপাশি শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনকে ‘ন্যায়সঙ্গত’ জানিয়ে তাদের আন্দোলনে পুলিশি বাধারও নিন্দা জানিয়েছে এই সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সোমবার বাংলাদেশ উদীচীর তথ্য ও প্রচার বিভাগের সম্পাদক কংকন নাগের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চা শ্রমিকদের আন্দোলনে সংহতি জানায় এই শিল্পীগোষ্ঠীটি।
পাতা তোলার ভর মৌসুমে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে সাময়িক কর্মবিরতির পর শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে রয়েছেন দেশের বিভিন্ন চা বাগানের চা শ্রমিক। এতে বাগান অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে সিলেট ভ্যালির ২৩টি, হবিগঞ্জের ২৪টি এবং মৌলভীবাজারের ৯২টি বাগানসহ মোট ২৪১টি চা বাগানের শ্রমিক একযোগে এ ধর্মঘট শুরু করেন। এ সময় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বাগানের বিভিন্ন সেকশনে মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দিনে মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে বাগানে কাজ করে আসছেন চা শ্রমিকরা। উদয়াস্ত পরিশ্রম করে যে টাকা তারা পান তা দিয়ে বর্তমান সময়ে একটি পরিবারের ভরণ-পোষণ করা প্রায় অসম্ভব।“
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত কিছুদিন ধরে দেশে চাল, ডাল, তেল, সবজি, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। যার ফলে, জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে স্বচ্ছল, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
“এ অবস্থায় মাত্র ১২০ টাকা দৈনিক মজুরি দিয়ে কারো পক্ষেই পরিবারের সব সদস্যের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানো সম্ভব নয়। তাই, ন্যায়সঙ্গত কারণেই দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ন্যুনতম ৩০০ টাকায় উন্নীত করতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছেন চা শ্রমিকরা। “
উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করলেও চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি কর্ণপাত করা হয়নি। বাগান মালিক বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের দাবির প্রতি ধরনের আশ্বাসও আসেনি।
“উল্টো তাদের (চা শ্রমিক) ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে বলপ্রয়োগে দমন করার চেষ্টা করছেন তারা। বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকদের আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করছে পুলিশ।“