“আমি প্রস্তাব রাখব, এটাকে নৌ মন্ত্রণালয় না রেখে জাহাজ ও বন্দর মন্ত্রণালয় যেন রাখেন,” বলেন তিনি।
Published : 28 Sep 2024, 11:14 PM
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে জাহাজ ও বন্দর মন্ত্রণালয় করার প্রস্তাব করবেন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার দুপুরে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এর বিআইআইএসএসে আয়োজিত 'গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ: মানবাধিকার প্রসঙ্গ' শিরোনামের আলোচনা সভায় তিনি তার এই আগ্রহের কথা বলেন।
“সাবেক প্রধানমন্ত্রী তো চলে গেছেন, এখন নৌকার দায়িত্ব আপনি পেয়েছেন”- আলোচনা সভার অতিথি সাংবাদিক আশরাফ কায়সারের এমন প্রশ্নে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “আমার এই মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করতে হবে। নাম রাখতে হবে জাহাজ মন্ত্রণালয়। এটার নামই নৌমন্ত্রণালয়। আমি প্রস্তাব রাখব, এটাকে নৌ মন্ত্রণালয় না রেখে জাহাজ ও বন্দর মন্ত্রণালয় রাখেন। আমি তো নৌকা চালাই না, জাহাজ চালাই।”
দাঙ্গা পুলিশকে কেন ৭.৬২ ৩৯ টাইপ অস্ত্র দেওয়া হবে- এমন প্রশ্ন রেখে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এটা সাংঘাতিক মরণাস্ত্র। এটা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটা কোন সময় থেকে দেওয়া হয়েছে, কেন দেওয়া হয়েছে; সেটি তদন্ত হওয়া দরকার।”
এক আলোচক গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানালে এই উপদেষ্টা বলেন, “এই বিষয়ে আমি ক্যাবিনেটে বিস্তারিত কথা বলব।”
বিগত সরকারের সমালোচনা করে বস্ত্র ও পাট এবং নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, “আমি নিজে দুর্নীতি করব না, কাউকে করতেও দেব না। আমার মনে হয়, আমার আগে যারা ছিলেন তাদের কোনো কাজ ছিল না, চুরি কীভাবে করতে হয়, প্রজেক্ট কীভাবে বানাতে হয়, প্রজেক্ট কাজ করছে কি না, আমি এক মন্ত্রণালয় দেখতেছি। পাট তো শেষ। পাট খেয়ে ফেলছে প্লাস্টিকে।
“আরেক মন্ত্রণালয়ে প্রজেক্ট আর প্রজেক্ট দেখতে পাচ্ছি। কিছু বুঝতে পারছি না। ২৪টা স্থলবন্দর বানিয়েছে, এর মধ্যে ৮/৯টা স্থলবন্দরে কোনো গরু ছাগলও যায় না। কেন বানায়ছে? আমার ইচ্ছা হইছে, আমার বাড়ির কাছে বানাইছি। আমার বাড়ির কাছে থাকুক না একটা স্থলবন্দর, এই ভাবে।”
রাজনৈতিক দলের জন্য একটি আইন করার কথা জানিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, “আমার কাছে পলিটিকাল পার্টি এক্টের একটা খসড়া আছে, সেটা বদিউল আলম মজুমদার (নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান) আমার কাছে চেয়েছেন, আমি এটা তাকে দিয়ে দেব। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো যারাই ক্ষমতায় যান, তারা ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে চান। এটা দেখে আসছি ১৯৭২ এর পর থেকে এই পর্যন্ত।
“অনেক রক্ত ঝরার পর আমরা একটা রাজনৈতিক দলের ভিতরটা দেখলাম। এই রাজনৈতিক দলটি যা করেছে, জঘন্যতম নাৎস্যির সঙ্গে তুলনা করলেও হয়রান হয়ে যাবেন। যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এখনও বলেন, তিনি রক্তপাত বন্ধ করার জন্য চলে গেছেন। আমার মনে হয়, তার কোনো হিতাহিত বুদ্ধিও নাই যে এতোগুলো মানুষ মারা গেছে।”
তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান আছেন তারা সবাই ভালো মানুষ। কিন্তু তারা মাত্র প্রধান হয়েছেন। এখানে সময় লাগবে। মিনিমাম এক বছর সময় লাগবে তাদের সব কিছু গুছিয়ে আনতে।”
সমাজে নাগরিক সমাজ গড়ে তোলার প্রতি জোর দিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “নাগরিক সমাজ তৈরি করেন, আমাদের দেশে নাগরিক সমাজ নাই। নাগরিক সমাজ না থাকলে যাদের ভোট দিয়ে বসাবেন তারাও একই রকম আচরণ করবে।”
পুলিশ বাহিনীকে পরিবর্তন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের পুলিশ বাহিনী পরিবর্তন করা হবে, তারা নিজেরাও চাচ্ছে। আমরা যদি পুলিশকে মানবতার পুলিশ করতে চাই তাহলে আমাদের অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।”