শাহাবুদ্দিনের একক চিত্রপ্রদর্শনী, ২০০৯

admin
Published : 21 Sept 2009, 05:40 AM
Updated : 21 Sept 2009, 05:40 AM


ঘোড়া, ক্যানভাসে তেলরঙ, ৮১ x ১৪২ সেমি, ২০০৯

ধানমণ্ডির গ্যালারী চিত্রক-এ (রাস্তা ৪, বাড়ি ২১) ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯ থেকে শুরু হয়েছে শিল্পী শাহাবুদ্দিনের একক চিত্রপ্রদর্শনী। এটি শিল্পীর ২৭তম একক প্রদর্শনী। এর আগে দেশে ১৯৯৫ ও ১৯৯৭ সালে শিল্পাঙ্গন কনটেম্পরারি আর্ট গ্যালারিতে শিল্পীর দুটি একক প্রদর্শনী হয়েছিল। এবারের প্রদর্শনীর উদ্ধোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী একে খন্দকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শিল্পী জয়নুলের সহধর্মীনী জাহানারা আবেদীন।

…….
শাহাবুদ্দিন,জন্ম. ঢাকা ১৯৫০
…….
শাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালে আর্ট কলেজে থাকাকালীন মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭৪ সাল থেকে প্যারিসে প্রবাস করছেন।শিল্পীর 'Shahabuddin 2009' নামের এ প্রদর্শনী চলবে ৯ অক্টোবর ২০০৯ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পযর্ন্ত। গ্যালারী চিত্রকের সৌজন্যে প্রদর্শনীর ২৬টি ছবি আর্টস-এর ওয়েব গ্যালারিতে উপস্থাপিত হলো। প্রদর্শনী শেষ হওয়ার পরেও আর্টস আকাইভে আগ্রহী দর্শক প্রদর্শনীটি দেখতে পাবেন।


মুক্তিযোদ্ধা, ক্যানভাসে তেলরঙ, ৪৩ x ২৫৯ সেমি, ২০০৯

চিত্রপ্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত ছবিপুস্তিকায় শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক নিসার হোসেন শাহাবুদ্দিন সম্পর্কে যা লিখেছেন তা নিচে যুক্ত হলো:

বাংলাদেশের সমকালীন শিল্পকলার অঙ্গনে শিল্পী শাহাবুদ্দিন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী ও স্বতন্ত্র চিত্রশৈলী নিয়ে উষ্ণ-উজ্জ্বল এক সূর্যের মতোই মাঝ-আকাশে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। গত শতকের ষাট ও সত্তর দশকের শিল্পীরা পাশ্চাত্যের আধুনিক শিল্পকলার অনুপ্রেরণায় আমাদের শিল্পকলাকে যে-পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন তাঁদের বিপরীত গন্তব্যে যাত্রা করেও খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছেন।

শাহাবুদ্দিনের হৃদয়ে নান্দনিক চেতনা কীভাবে অঙ্কুরিত হয়েছিল জানা নেই, তবে তা প্রস্ফূটিত হয়েছিল এক বিভীষিকাময় রণাঙ্গণের রক্ত, মৃতদেহ আর ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকেই। সেই নির্মম বাস্তবতার প্রত্যক্ষ অভিঘাতেই তাঁর কলাচৈতন্য ও নন্দবোধের অভিবৃদ্ধি। এই প্রক্রিয়াতেই তাঁর প্রলয়শক্তি সহজেই সৃষ্টিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে।

বাস্তবানুগ চিত্রাঙ্কনের যে নৈপূণ্য তিনি ছাত্রত্বকালেই রপ্ত করেছিলেন তাকেই আবার বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রবল ক্রোধ আর অহংকার এই চিত্রবৃত্তিতে শাণিত করে ক্যানভাসের সাদা-জমিনের ওপর বিধ্বংসী অস্ত্রের সমতুল্য কোনো তুলিকার সংঘর্ষে যেন যুদ্ধক্ষেত্রের ধ্বংসস্তূপকেই শেষ পর্যন্ত প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণীঝড়ের মতো প্রক্ষিপ্ত এক বিশ্বজয়ী নায়কের আদর্শ প্রতিরূপে পরিণিত করেন। এই বৈশিষ্ট্যর কারণেই কলাতাত্ত্বিকেরা তাঁর ছবির নন্দ রসকে বীর রস হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই বিশেষ রসের প্রাবল্যে শাহাবুদ্দিনের ক্যানভাসে শীঁর্ণকায় মহাত্মা গান্ধী এমনকী মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়া জাতির জনকের নিষ্প্রাণ দেহটিও মহানায়কের শৌর্য-বীর্যে মহীয়ান হয়ে ওঠে।

অধ্যাপক নিসার হোসেন
চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রদর্শিত ছবি থেকে
(বড় আকারে দেখতে ছবিতে ক্লিক করুন।)

—-
ফেসবুক লিংক । আর্টস :: Arts

বন্ধুদের কাছে লেখাটি ইমেইল করতে নিচের tell a friend বাটন ক্লিক করুন: