সাত ভারতীয় বাঙালি শিল্পীর প্রদর্শনী: শেকড়ে ফেরা

admin
Published : 4 May 2008, 07:36 PM
Updated : 4 May 2008, 07:36 PM


দি মংক, অমিতাভ ব্যানার্জী, ১৯৯৬

ধানমণ্ডির 'বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টস্‌'-এ ২৫ এপ্রিল ২০০৮ থেকে শুরু হয়েছে 'সাত ভারতীয় বাঙালি শিল্পীর প্রদর্শনী: শেকড়ে ফেরা' (7 Bengali Artists from India: Return to the Roots) চিত্রপ্রদর্শনীর। শিল্পীরা হলেন পরিতোষ সেন, অমিতাভ ব্যানার্জী, বিজন চৌধুরী, গণেশ

…..
পরিতোষ সেন, জন্ম. ঢাকা ১৮/১০/১৯১৮
…….
হালুই, সুহাস রায়, ধীরাজ চৌধুরী ও যোগেন চৌধুরী। প্রদর্শনীটি চলবে মে-র ৯ তারিখ পর্যন্ত। এবারকার প্রদর্শনীতে শিল্পীদের ৩৭টি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। বেঙ্গল শিল্পালয়-এর সৌজন্যে আর্টস-এর ওয়েব গ্যালারিতে তা থেকে ১৯টি ছবি উপস্থাপন করা হলো। প্রদর্শনীর পরেও আর্টস-এর আর্কাইভে ছবিগুলি দেখা যাবে।

নিচে প্রদর্শনী বিষয়ে বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টস্‌-এর ভাষ্য তুলে দেয়া হলো।

বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টস্‌-এর ভাষ্য

……
অমিতাভ ব্যানার্জী, জন্ম. সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম ১৯২৮
……..
স্মৃতি আর শেকড় যেকোনো সৃজনশীল সৃষ্টিধর্মী মানুষকে বারংবার তাড়িত করে। স্মৃতিকে ঘিরেই কত না মহৎ শিল্পকর্ম সৃষ্টি হয়েছে। স্মৃতি অভিঘাত হানে মননে আর শেকড় ঋদ্ধ করে সৃষ্টির উদ্যানকে।

ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদ এবং বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সহযোগিতায় বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস প্রখ্যাত সাত ভারতীয় শিল্পীর শেকড়ে ফেরা শীর্ষক পক্ষকাল


…….
বিজন চৌধুরী, জন্ম. ফরিদপুর ১৯৩১
…….
ব্যাপী চিত্রকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ইতোপূর্বে এ ধরনের প্রদর্শনী বোধকরি আর হয়নি। এই চিত্রকরদের সকলেরই জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের মাটিতে। অনেকেরই বাল্যকাল অতিবাহিত হয়েছে এদেশের জল-হাওয়ায়। পরবর্তীকালে এঁদের মানসভুবন ও সৃষ্টি আবর্তিত হয়েছে বৃহত্তর ভারতীয় পরিমণ্ডলে আর পঠন-পাঠনের দিগন্ত বিস্তৃত হয়েছে বহুমাত্রিক সংস্কৃতির আবহে। ধারাবাহিক শিল্পচর্চা, ঐতিহ্য ও আধুনিকতার ধ্যান-ধারণাকে আত্মস্থ করে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে এই সাতজন শিল্পী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়েছেন। তবুও জন্মভূমির প্রতি
রয়ে গেছে এঁদের তীব্র এবং প্রবল আকর্ষণ। শৈশব কিংবা যৌবনের সুখময়,

…….
গনেশ হালুই, জন্ম. জামালপুর ১৯৩৬
…….
স্মৃতিময় দিনগুলো অম্লান হয়ে আছে তাঁদের ধমনিতে। আবেগ আর অনুভূতিতে এদেশের শ্যামল নিসর্গ, জনপদ, নদী কিংবা নারী, প্রেম আর অপ্রেম তাঁদের বিহ্বল করে তোলে। শৈশবের তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনাবলি তাঁদের অনেককে তাড়িত করে। এই অনুষঙ্গ তাঁদের সৃষ্টিতে সুক্ষ্মভাবে কখনো-সখনো উঁকি দিয়ে যে যায় সে কথা তো বেশ দৃঢ়ভাবেই বলা যায়।

সাত ভারতীয় এই বাঙালি শিল্পী উৎকর্ষে, বৈচিত্র্যে ও নান্দনিক বৈভবে নিজস্ব ভুবন সৃষ্টিতে সমর্থ হয়েছেন। প্রত্যেকের প্রত্যয়, চিত্রভাষা ও শৈলী আলাদা। এমনকি রেখা এবং পরিশীলিত সংবেদনেও ভিন্নতা আছে।

……
সুহাস রায়, জন্ম. ঢাকা ১৯৩৬
…….
এই প্রদর্শনীতে কাজ আছে ঢাকার জিন্দাবাহারের বর্ষীয়ান শিল্পী পরিতোষ সেনের, সন্দ্বীপের অমিতাভ ব্যানার্জীর, ঢাকা আর্ট ইনস্টিটিউটের উজ্জ্বল ও মেধাবী ছাত্র বিজন চৌধুরীর, জামালপুরের গণেশ হালুইয়ের, ঢাকার সুহাস রায়ের, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধীরাজ চৌধুরীর ও কোটালীপাড়ার যোগেন চৌধুরীর।

তাঁদের কাজের স্বতন্ত্র অনুভূতি ও পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি আমাদের অভিজ্ঞতার দিগন্তকে একদিকে বিস্তৃত করে, অন্যদিকে আমরা জীবন রূপায়ণের


…….
ধীরাজ চৌধুরী, জন্ম. ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১৯৩৬
…….
অন্তর্নিহিত এক চেতনা পর্যবেক্ষণ করি। শিল্পভাবনায়, আধুনিকতায় এবং ঐতিহ্য-জিজ্ঞাসায় প্রত্যেকের কাজে যে-পথ নির্মাণের তাগিদ আছে প্রদর্শনীর চিত্রগুচ্ছে সেরকমেরই কিছু নিদর্শন আছে। আমরা আশা করি বাংলাদেশের শিল্পী ও চিত্রানুরাগীরা এই প্রদর্শনী দেখে প্রভূত আনন্দ লাভ করবেন।

রবীন্দ্রনাথের একটি গান আছে 'ফিরে চল মাটির টানে'। এই গানের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য যে কত গভীর আর ব্যাপক সে কথা আমরা সকলেই জানি। এই গান আমাদের যেমন শেকড়ে নিয়ে যায়, তেমনি ছড়ানো ভুবনে আমরা

…….
যোগেন চৌধুরী, জন্ম. গোপালগঞ্জ ১৯৩৯
……
নিজেদের শনাক্ত করতে পারি। শিল্প ও সাহিত্য এক বৃহত্তর বোধ নিয়ে আমাদের চোখে তখন খেলা করে।

শিল্পীরা তাঁদের সৃষ্টিসম্ভার নিয়ে ফিরে এসেছেন এই মাটির টানে, সেজন্যে তাঁদের অভিনন্দন।

ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদ এবং বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশন এই প্রদর্শনীকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য যে সহযোগিতা করেছেন সেজন্যে তাদের ধন্যবাদ জানাই।

●●●

প্রদর্শনীর ছবি >>

প্রদর্শিত চিত্রকর্মের ছবি তুলেছেন ইন্দ্রনীল কিশোর।