Published : 10 Nov 2021, 02:09 PM
চলছে স্পর্ধার প্রযোজনায় সৈয়দ জামিল আহমেদের নতুন ড্রয়িংরুম থিয়েটার, বিস্ময়কর সবকিছু। নাটকটির প্রেস শো দেখে লিখেছেন কবি ও সাংবাদিক শিমুল সালাহ্উদ্দিন। — বি.স.
সব শিল্পমাধ্যমের সার আছে নাট্যকলায়, ফলে নাট্যকলা হল তিলোত্তমাশিল্প। শব্দ আর শরীরের মতো প্রাগৈতিহাসিক সূত্র যেমন তার মধ্যে বহমান, তেমনি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বের আধুনিকতম যন্ত্র ও কৌশলও নাট্যকলায় সন্নিবেশিত হয়। ফলত, সে বহুমুখী, বহুরূপী, তাঁর নীরিক্ষাপ্রবণতার সীমাও প্রায় অসীম। প্রসেনিয়াম মঞ্চের সীমারেখা মঞ্চের নাটক ভেঙে ফেলেছে কবে তা এখন সম্ভবত নাটকের অধ্যাপকদেরও গুগল ঘেঁটে বলতে হবে।
আলোকচিত্র: বিস্ময়কর সবকিছু'র পোস্টার
সৈয়দ জামিল আহমেদের নতুন নাটক 'বিস্ময়কর সবকিছু'র প্রেস শো দেখে, বেরিয়ে, সীমানা ছাড়ানো শিল্প কাকে বলে এই লোকটা জানে, এই ভাবনার সাথে যুগপৎ, মনে পড়লো সেই শ্বাশত প্রশ্ন। স্রষ্টা বা কবির সব থেকে বড় জোর কি? শিল্পীর সব থেকে বড় শক্তি কি?
মনে পড়লো সৈয়দ জামিল আহমেদের প্রিয় কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথা। যিনি, যেনো যাবার আগে তালিকা করে লিখছেন, লিখেছিলেন—
'ও ফুলের সাজি
ও নদী, ও মাঝি
বনের জোনাকি
ও নীড়, ও পাখি
যাচ্ছি…'
(যাচ্ছি/ সুভাষ মুখোপাধ্যায়)
কবিতায় এমন 'যা কিছু প্রিয়'র তালিকা করেছিলেন হুমায়ুন আজাদও। লিখেছিলেন, 'ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল ভালো থেকো, ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান ভালো থেকো..'। রবিঠাকুর গেয়েছিলেন লিখে— 'বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান'।
শিল্প, জীবন, মৃত্যু যেখানে বাণবেঁধার বিন্দুতে মিলে যায় সেখানেই বুঝি ঝলসে ওঠে মানুষের আশাবাদ! মানুষ তখন বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজতে থাকে। নিরাশার অন্ধকার থেকেও আশার আলোর রোশনাই খুঁজে ফেরে সে। কবিতার পাঠকদের তখন মনে পড়ে, বুদ্ধদেব বসুর, কী ভালো আমার লাগলো আজ এই সকালবেলায়, কেমন করে বলি! বুদ্ধদেব বসু সেখানে তালিকা করছেন, আজ এই সকালবেলায়, আকাশে সূর্যের বন্যা, গুণীর কণ্ঠের অবাধ উন্মুক্ত তান, মাঝখানে ঝিলকিয়ে ওঠা চিলকা, হৃদের ধারে এসে পাওয়া যা এতোদিন না পাওয়া, দুটো প্রজাপতির বহু দূর থেকে উড়ে আসা… আহা বিস্ময়কর সবকিছু। এই বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতাই কী মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে!
আমি নিশ্চিত, কবির সবচেয়ে বড় জোর তার ভালোবাসার জোর, ভালোবাসতে পারার জোর, ভালোবাসা নিতে পারার জোর। এবং যে মহৎ কবিদের কথা বললাম, তাদের ভালোলাগা কবিতা আর তালিকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মঞ্চের কবি, সৈয়দ জামিল আহমেদ।
আলোকচিত্র: ডানকান ম্যাকমিলান ও সৈয়দ জামিল আহমেদ
তাঁর নবনির্দেশিত নাটকটির মূল টেক্সট তিনি ধার করেছেন সাহেব নাট্যকার ডানকান ম্যাকমিলানের থেকে। ১৯৮০ সালে জন্ম নেয়া ম্যাকমিলান মূলত সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক সমস্যা ও সমাধান—
নিয়ে কাজ করেন তাঁর নাটকে। তাঁর নাটক ব্রডওয়েতে অভিনীত হয়েছে, এইচবিও টিভিড্রামা হিসেবে প্রচার করেছে, পেয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নাট্যপুরষ্কারও। নিরীক্ষামূলক নাট্যপ্রচেষ্টার জন্য ডানকান ম্যাকমিলান প্রসংশিত। যে তিনটি নাটকের জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি আলোচিত সবগুলিই কোন না কোন সামাজিক সমস্যা মোকাবেলা করে। তাঁর Lungs নাটকে পিতৃত্ব, People, Places and Things নাটকে মাদকাসক্তি ও তা থেকে উত্তরণ এবং Every Brilliant Things এ 'আত্মহত্যাপ্রবণতা' কেন্দ্রীয় প্রসঙ্গ হিসেবে এসেছে।
ডানকান ম্যাকমিলান, দ্যা গার্ডিয়ানকে দেয়া একটা সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ক্যাথরিন লাভের প্রশ্নের জবাবে বলছেন, ''I think there's a perception that the playwright is someone who writes the spoken text and that everything else is the domain of the director. What I enjoy most as a theatre-maker and as an audience member is getting my brain to do more than one thing at once. Theatre at its best is, "incredibly direct and incredibly interventionist". (Duncan Macmillan: theatre at its best is an intervention | Theatre | The Guardian)
Every Brilliant Thing মূলত একটা মনোলগ বা একাঙ্কিকা। সৈয়দ জামিল আহমেদ নাটকটি অনুবাদ করেছেন, রূপান্তর ও আমাদের স্থান কাল পাত্রের বিবেচনায় প্রাসঙ্গিকীকরণ করেছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন। মূল অভিনেত্রী তাঁর রিজওয়ান, মন্ত্রাস'র তুরুপের তাস, প্রিয় শিক্ষার্থী-সহকর্মী, মহসিনা আক্তার।
নাটকটি এমনভাবে নির্দেশিত যে, দর্শক নিজের অজান্তেই অংশ হয়ে পরবেন নাটকের। মহসিনার চোখে লেগে থাকার মতো আন্তরিক অভিনয় এ নাটকের জন্য যথেষ্ট হতো না, যদি তিনি অন্যান্য সাহায্যকারী চরিত্রে দর্শকদের কাউকে কাউকে আত্মীকৃত করে দারুণ সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে নাটকটি এগিয়ে নিয়ে না যেতেন। ফলে অভিনয়ে একশোতে ৯৮ পাওয়ার পর মহসীনা তাৎক্ষণিক চরিত্র সমন্বয়ে পাবেন আরো ৮০। অর্থাৎ ১০০ তে ১৭৮। আমি নিশ্চিত প্রেস শো'র পর নিয়মিত মঞ্চায়ন হতে থাকলে দিনে দিনে আরো উন্নত হবে মহসিনার পরিবেশনা, হবে আরো হৃদয়গ্রাহী।
সৈয়দ জামিল আহমেদের গুণমুগ্ধ এই দেশে যেমন আছেন, তেমনি আছেন তার শত্রুসমালোচকদলও। তাদের সবচেয়ে বড় সমালোচনা জামিল আহমেদের নাটক প্রযুক্তি, আলো, সেট, প্রপসের চমকভারাক্রান্ত। কবি সোহেল হাসান গালিবের একটা কথা তো আমার কানেই লেগে আছে, তিনি এক আড্ডায় বলেছিলেন, 'তিনি যতখানি ডিরেক্টর, তার অধিক ডেকোরেটর'। এই সমালোচনার মোক্ষম জবাব দিতেই কী না 'বিস্ময়কর সবকিছু'কে সৈয়দ জামিল আহমেদ নকশা করেছেন একেবারে শাদামাটা আলোয়, কোন আলোকপ্রক্ষেপক ব্যবহার না করে। ঘরের স্বাভাবিক আলো ছাড়া কিচ্ছু যেনো দরকার নেই তাঁর এমন একগুঁয়ে ভঙিমায়। সেট বলতে চারপাশে চেয়ার দেয়া একটা ঘর। নাটকটি যেকোন বাড়িতে, কোনো অভিনয়যোগ্য স্টুডিওতে, কনফারেন্স সেন্টার অথবা অন্যকোন স্পেসে যে কোন সময় মঞ্চায়ন করে ফেলার উপযোগি করে নির্মাণ করা হয়েছে। আনুমানিক ২৫ ফুট লম্বা ও ১৫ ফুট চওড়া একটি ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে দেয়াল বরাবর চারদিকে চেয়ার এবং ঘরের চার কোণায় আলোকযন্ত্র স্থাপন করে এই নাটকটি মঞ্চায়ন করা যাবে, এমন নিরাভরণ। এবং শুধুমাত্রই অভিনয় নির্ভর।
আলোকচিত্র: বিস্ময়কর সবকিছু' নাটকের অভিনয় মুহূর্তে মহসিনা আক্তার
প্রেস শো এর পরের দুটি শো আগে থেকেই হাউসফুল বুক ছিলো। ফলে দেখতে হলে প্রেস শো-তেই যেতে হতো। মোহাম্মদপুর থেকে জ্যাম ঠেলে টেনশন করতে করতে শো শুরুর ৫ মিনিট আগে পৌঁছে দেখি, দর্শকসারিতে আছেন স্বয়ং সৈয়দ জামিল আহমেদের জননী। এবং নির্দেশক জামিল আহমেদ মারফতই জানলাম, যে বাড়িটিতে এই শো-টি হচ্ছে এটি তার সহোদরের। কুশল বিনিময়ের পরই সূত্রধর অভিনেত্রী মহসিনা এসে দর্শক আমার হাতে কিছু দারুণ যত্নে চিত্রিত কিছু কার্ড দিয়ে গেলো। অনুরোধ করলো, কার্ডে থাকা নাম্বার অনুযায়ী যে শব্দবন্ধ লেখা আছে তা যেনো চিৎকার করে বলি, তাতে তাঁর সহযোগিতা হবে। এমন কার্ড পেলেন অন্তত গোটাদশেক দর্শক।
কার্ড হাতে নিয়ে অনুভূত হলো, বাবা নাটক দেখতে এলাম নাকি খেলতে! নাটক দেখতে বসে বোঝা গেলো এ এক নতুন প্রকরণ, দর্শক-নটনটি একীভূত করে ফেলার নির্দেশক- কৌশল। নিজের পোষা জন্তুর জন্য মমতার ভাণ্ডার এক বালিকা বাবা-মায়ের সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে গেছে। আত্মহত্যার ট্রমায় থাকা সে বালিকা সারাজীবন ধরে তার কাছে যা কিছু বিস্ময়কর, তার একটা তালিকা করা শুরু করে তখন। যা কিছু ভালো লাগে তার, যা কিছু ভালোবাসে সে, সমস্ত কিছু সেই তালিকায় জায়গা দিতে থাকে সে। কী নেই সেই তালিকায়!
১. হাওয়াই মিঠাই
২. রংধনু
৩. ঘুমোতে যাবার সময় পার হওয়ার পরও টিভি দেখা
৪. ময়ূরের পালকে উজ্জ্বল রঙ
বিষন্ন বাচ্চা মেয়েটার তালিকা বড় হতে থাকে। সেই তালিকায় যুক্ত হতে থাকে একের পর এক অনুষঙ্গ।
৬. শামুকের ডিম
৭. বৃষ্টির দিনে বাসার ছাদে সাবান মেখে পিছল খাওয়া
৮. স্কুলের গেটে আচার
৯. নারকেলের আইসক্রিম
জীবনের দিনগুলি আর ঘটনাপরম্পরায় তার তালিকায় যুক্ত হয় অদ্ভুত সব বিস্ময়কর সব ভুক্তি।
৩১৫. পুরনো বইয়ের ঘ্রাণ
৩১৮. মায়ের বিয়ের শাড়ি
৩১৯. হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে আসা
৩২০. ঝগড়ার পর আবার ভাব জমানো
৫১৬. কিছু জয় করা
৫১৭. দাঁতে পালঙ শাক লেগে আছে কিনা খুব ভাব আছে এমন কাউকে দিয়ে পরখ করে নেয়া
৫১৮. জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে যখন কোন বাগধারার মিল পাওয়া যায়, যেমন ঝড়ে সত্যি সত্যি বক মরে যায়
৫২১. পুকুরের ওপর ঝুল বারান্দা
মেয়েটার মা মারা যায়, হাসপাতালবাসের পর, কুলখানির পর তার তালিকায় যুক্ত হয়, মাকে জড়িয়ে ধরা। এ তালিকা বাড়তে থাকে। পাঁচলক্ষ পঁচিশ হাজার নয়শো চব্বিশ নম্বরে হয়তো আসে 'বরিশালের লঞ্চে শুকনো মরিচ দিয়ে ইলিশ ভাজা'। সাতলক্ষ সাতাত্তর হাজার সাতশো সাতে 'প্রভাতফেরিতে খালি পায়ে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গান'।
সেই তালিকা এতো বড় এতো বড়ও হতে থাকে যে তালিকার গল্প বলতে বলতে নটি মহসিনা, যিনি এই নাটকের মূল ক্রীড়নক, আপনার আমার আমাদের প্রত্যেকের জীবনের গল্প বলে ফেলেন, আমাদের মানে দর্শকদের সঙ্গে নিয়েই, এমনকী তাদের সম্পৃক্ত করে নিয়ে, প্রত্যেককে ঠেলে দেন তার ভালোলাগা সব মুহূর্তের কাছে। স্মৃতির কাছে, বিস্মৃতির কাছে, আনন্দ বেদনা ও উচ্ছ্বাসের কাছে।
Every brilliant Thing বা বিস্ময়কর সবকিছুর এক তালিকা কে না দেখতে চায়! ডানকান ম্যাকমিলানের, সৈয়দ জামিল আহমেদের বা মহসিনা আক্তারের মতো আমি নিশ্চিত সব মানুষ প্রতিদিন আশ্চর্য হতে চান, বিস্মিত হতে চান, কারণ বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে আদতে তিনি মরে যাবেন, বাঁচার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলবেন।
ডানকান ম্যাকমিলান আলাপের একেবারে নিরঙ্কুশ এ জায়গাটি ধরেই যেনো ডিপ্রেশন বা হতাশা উপজীব্য করে এ নাটক লিখেছেন। নাটক দেখার পর আলাপে (আলাপটি দেখতে লিংকে ক্লিক করুন) সৈয়দ জামিল আহমেদ স্বীকারও করেছেন ম্যাকমিলানের টেক্সটে তিনি স্থানিক প্রাসঙ্গিকীকরণ ছাড়া, হাত দেননি। ম্যাকমিলান এই নাটকটিতে একাধারে নিদারুণ ক্ষতি ও আবেগমুক্তিকর হাসির মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। আত্মহত্যার ছায়ায় বসবাসকারী এক বালিকার পুরো জীবন— বড় হওয়া, প্রেম, আনন্দ, হতাশা, বিচ্ছেদ, গান সব উঠে আসে এ নাটকে।
কী দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে এ নাটক! নাট্যদল স্পর্ধা এ নাটক নিয়ে যেতে চায় আপনার বাড়িতেও। তাদের আমন্ত্রণ করুন, দেখে ফেলুন 'বিস্ময়কর সবকিছু', যা শুধুমাত্র নাটক নয়, একটি কবিতা। একটি কবিতা যেমন একেক পরিস্থিতিতে একেকরকম অনুভূতি দেয় আপনাকে, এ নাটকও একেক মঞ্চায়নে একেক রকম দর্শকদের উপস্থিতিতে হয়ে উঠবে ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতিদায়ক।
প্রেস শো-তে যেমন একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক বুলবুল আহমেদ জয় প্রথমে হয়ে উঠলেন পশু চিকিৎসক, নাটক দেখতে গিয়ে আমি হয়ে উঠলাম বর্ণনাত্মক চরিত্রে অভিনয় করা প্রধান অভিনেত্রীর বাবা, আসলাম অরণ্য হয়ে উঠলো তাঁর প্রেমিক শান্ত।
এই যে দর্শকদের নাটকের মধ্যে একীভূত করে ফেলা এ 'বিস্ময়কর সবকিছু'র এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এমন সব জনপ্রিয় গানের অনুষঙ্গ ব্যবহার করা হয়েছে যা দর্শকদের স্মৃতিতে নিদারুণভাবে টোকা দিতে পারে। যেমন ধরা যাক, ব্রাদার্স ফোর এর বিখ্যাত গান, ইফ ইউ মিস দ্যা ট্রেইন কিংবা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের 'খোলা আকাশকে অত ভালো লাগতো' বা অঞ্জন দত্ত'র রঙপেন্সিল গানটি ব্যবহার করেছেন নির্দেশক। জনপ্রিয় গান বা মুহূর্ত অনুষঙ্গ ব্যবহার করার কারণে, নাটক দেখে বেরিয়েও নাটকের টেক্সট, ঘটনাবলী দর্শকের মাথায় থেকে যায়, তাড়িয়ে বেড়ায়।
আমাদের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে এ নাটক তাই এক নতুন সংযোজন। এ নাটকের সবচেয়ে বড় সমালোচনা করবেন আমাদের প্রথাগত নাটকের কাণ্ডারিরা, যারা মঞ্চে নৃত্যগীতবাদ্যে আপনাকে এক সন্ধ্যা আনন্দে আটকে রাখার নাটক দেখিয়েছেন আপনাকে এতোদিন, বিস্ময়কর সবকিছু' শুধুমাত্র আনন্দ নয়, আপনাকে দেবে উপলব্ধি, এক জীবনের, যে উপলব্ধির পীড়নে আপনি হয়তো ছুটে যাবেন আপনার ক্ষমা চাইতে যাওয়ার কথা যার কাছে, হয়তো গিয়ে দাঁড়াবেন আপনার এক জীবনে অর্জিত সমস্ত বিস্ময়কর ভালোলাগার পাশে।
সবকিছুর পরে (আগেও), এ নাটক নাট্যশিক্ষার্থীর কাছে হবে নতুন নাটকের রসদ, গবেষকের কাছে হবে খোরাক। নিরীক্ষামূলক নাটক বা শিল্পবস্তু গ্রহণ করার মতো প্রস্তুত দর্শক, পাঠক হলে, এ নাটক আপনারই জন্য নির্মাণ করেছেন সৈয়দ জামিল আহমেদ। আসুন, তাঁর আয়ু প্রার্থনা করে দেখে ফেলি অসামান্য এ শিল্পসৃজন।