‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘনিয়ে আনছে’ ইউক্রেইনে নেটোর সামরিক সহযোগিতা

রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেইনে নেটো জোটের সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ক্রমশ ঘনিয়ে আনছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি দিমিত্রি মেদভেদেভ।

লিথুয়ানিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর সম্মেলন শুরু হওয়ার দিনটিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার সম্মেলনের প্রথম দিনে নেটো জোটভুক্ত বহু দেশ ইউক্রেইনকে আরও যুদ্ধাস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মেদভেদেভ বলেছেন, এসব অস্ত্র ও আর্থিক সহযোগিতা রাশিয়াকে ইউক্রেইনে তার লক্ষ্য অর্জন থেকে বিরত রাখতে পারবে না।

মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, “পুরোপুরি উন্মাদ পশ্চিমারা এছাড়া অন্য কিছু করতেও পারবে না। সত্যি কথা হচ্ছে, এটা কানাগলি। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে।

“আমাদের জন্য এগুলোর মানে কী? এসব হওয়ারই কথা ছিল। আগে ঘোষিত লক্ষ্য অর্জনে বিশেষ সামরিক অভিযান চলবে।”

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির এ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান, মেদভেদেভ তার ডেপুটি।

রাশিয়া ইউক্রেইনে তার আক্রমণকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলছে, অন্যদিকে কিইভ ও তার মিত্ররা বলছে, জমি দখল ও প্রতিবেশীর ওপর প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে বিনা প্ররোচনায় যুদ্ধ চালাচ্ছে মস্কো।

পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, তারা এই যুদ্ধে জিততে ইউক্রেইনকে সহযোগিতা করছে। তারা এরই মধ্যে কিইভকে বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে।

মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সেসময় তিনি নিজেকে উদার আধুনিকতাবাদী হিসেবে উপস্থাপন করলেও এখন তার মধ্যে ব্যাপক পশ্চিমা-বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে।

অনেক কূটনীতিক মনে করেন, ক্রেমলিনের অভিজাতদের শীর্ষ কর্মকর্তারা কী ভাবছেন, মেদভেদেভের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সে সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়।

ইউক্রেইন গুচ্ছ (ক্লাস্টার) বোমা ব্যবহার করেছে এমন খবর উল্লেখ করে রাশিয়ার সাবেক এ প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার একই ‘অমানবিক যুদ্ধাস্ত্র’ ব্যবহারে মস্কোকেও তাগাদা দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বলেছে, তারা কিইভকে গুচ্ছ বোমা সরবরাহ করতে যাচ্ছে। এই ধরনের বোমাগুলো সাধারণত বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বিস্ফোরক ভর্তি ছোট ছোট বোমা ছড়িয়ে দেয়, যার অনেকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে বিস্ফোরিতও হয় না, হয় অনেক পরে।

এই বোমা ব্যবহারে বেসামরিক হতাহতের আশঙ্কা বেশি হওয়ায় অনেক দেশই এটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেইনকে এই গুচ্ছ বোমা সরবরাহ করে তবে রাশিয়াও ‘একই ধরনের’ অস্ত্র ব্যবহারে বাধ্য হবে।

৫০০ দিন পেরিয়ে যাওয়া ইউক্রেইনের যুদ্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেইন আগেও একে অপরের বিরুদ্ধে এই গুচ্ছ বোমা ব্যবহারের অভিযোগ এনেছিল।

আরও পড়ুন:

নেটোকে কড়া ভাষায় আক্রমণ জেলেনস্কির, যোগদান সহজ করার আশ্বাস মহাসচিবের