যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে শেষ কয়েক ঘণ্টার প্রচারেও ভোটারদের মন জয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন।
Published : 03 Nov 2020, 03:17 PM
সোমবার বাইডেন পেনসিলভেইনিয়া ও ওহাইওয় জনসংযোগ করে প্রচারে ইতি টেনেছেন; ট্রাম্প ছুটে বেড়িয়েছেন উইসকনসিন, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা ও পেনসিলভেইনিয়াতে।
জাতীয় পর্যায়ের জনমত জরিপগুলোতে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনকে ট্রাম্পের তুলনায় অনেকখানি এগিয়ে থাকতে দেখা গেলেও ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে তাদের ব্যবধান খুবই অল্প।
শেষ মুহুর্তের প্রচারে দুই প্রার্থী জয়-পরাজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ এ রাজ্যগুলোর ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ভোটের নির্ধারিত দিন, মঙ্গলবারের আগেই প্রায় ১০ কোটি ভোটার তাদের আগাম রায় জানিয়ে দিয়েছেন। বিপুল সংখ্যক আগাম ভোটের কারণে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়তে যাচ্ছে বলে অনুমানও করা হচ্ছে।
তবে পপুলার ভোটে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় না, জিততে হয় রাজ্যগুলোর জন্য নির্ধারিত ইলেকটোরাল ভোট। বেশিরভাগ রাজ্যে পপুলার ভোটে যে জিতবে, সব ইলেকটোরাল ভোটও তার হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি জিততে হবে।
এ কারণে পপুলার ভোট বেশি পাওয়া সত্ত্বেও ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে ইলেকটোরাল ভোটের মারপ্যাঁচে পড়ে গতবার হিলারি ক্লিনটন হোয়াইট হাউসে যেতে পারেননি।
চলতি বছরের ভোটে করোনাভাইরাস মহামারী বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে রোববারও ৮১ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
বর্ণবাদের মতো ইস্যুতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে এবার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতাও দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা অনেক পর্যবেক্ষকের।
রোববার ৬টি রাজ্যে প্রচার চালানোর পর সোমবারও প্রচারণার শেষ দিনে ট্রাম্প দোদুল্যমান ৪টি রাজ্যে ৫টি সমাবেশ করেছেন।
নর্থ ক্যারোলাইনায় সমর্থকদের তিনি বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্র আগামী বছর তার ইতিহাসের সেরা অর্থবর্ষ দেখবে।
“এমন হবে, যা সম্ভব বলে কেউ কল্পনাই করেনি,” বলেছেন তিনি।
নর্থ ক্যারোলাইনার পর ট্রাম্প পেনসিলভেইনিয়ার স্ক্র্যানটনে যান; বাইডেনের শৈশবের অনেকটা সময় এই শহরে কেটেছে।
In Grand Rapids, Michigan with @POTUS and @VP for the last #MAGA Rally of the 2020 campaign!
Our President fights so hard for each of us every single day and now we need to fight for him and fight for the future of this great Country by voting today for @realDonaldTrump !! pic.twitter.com/vY73UAca0K
— Ivanka Trump (@IvankaTrump) November 3, 2020
পেনসিলভেইনিয়ার সমাবেশে ট্রাম্প সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি এই রাজ্যে হেরে যাবেন বলে জনমত জরিপগুলো বলেছিল, কিন্তু নির্বাচনের ফলে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছিল।
সোমবার বাইডেনও পেনসিলভেইনিয়াতে প্রচার চালিয়েছেন। পিটসবার্গের সমাবেশে তার সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ছাড়াও জনপ্রিয় গায়িকা লেডি গাগা, সুরকার জন লিজেন্ড ছিলেন।
শেষ মুহুর্তে ওহাইওতে নেমে বাইডেন ভোটারদের উদ্দেশ্যে তার প্রচারণার মূলমন্ত্রটি ফের তুলে ধরেন। বলেন, এবারের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের আত্মার সঙ্গে সম্পর্কিত।
“সময় হয়েছে ট্রাম্পের ব্যাগ গুছিয়ে ফেলার। আমরা তার টুইট, ক্রোধ, ঘৃণা, ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতার শেষ দেখে ফেলেছি,” বলেন সাবেক এই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
ওহাইওতে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে বলে জনমত জরিপগুলোতে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প এই রাজ্যে হিলারিকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করলেও এবার রিপাবলিকান প্রার্থী তার প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় মাত্র দশমিক দুই শতাংশ এগিয়ে আছেন বলে জানিয়েছে রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিকসের জরিপ।
সোমবার ট্রাম্প মিশিগানের ট্রাভার্স সিটি এবং উইসকনসিনের কেনোশাতেও সমাবেশ করেছেন।
ট্রাভার্স সিটিতে তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের কাছে ভোট চেয়েছেন। রিপাবলিকান এই প্রার্থী তার প্রচার শেষ করেছেন মিশিগানের গ্র্যান্ড র্যাপিডসে। ২০১৬ সালেও তিনি এখানেই প্রচারে ইতি টেনেছিলেন।
নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন এ প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার রাতে হোয়াইট হাউসের ভেতরে একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছেন। এতে অংশ নিতে প্রায় ৪০০ অতিথিকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে।
অপরদিক প্রচারণা শেষ করে ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে ফিরে বাইডেন ও হ্যারিস নির্বাচনের ফল পর্যবেক্ষণ করবেন।
মঙ্গলবার রাতে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্লাজা ও হোয়াইট হাউসের কাছাকাছি একটি পার্কে ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীও জড়ো হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, জানিয়েছে সিবিএস নিউজ।
You could be the difference between someone making it out to the polls or staying home. And many states could be decided by a handful of votes. Join me and make some calls for Joe in the last few days of this election: https://t.co/FZknijCx0E pic.twitter.com/XGUnAArRXW
— Barack Obama (@BarackObama) October 31, 2020
President Trump and Democratic rival Joe Biden made a last-ditch push for votes in battleground states as their campaigns prepared for post-election disputes that could prolong a divisive presidential election https://t.co/moBFLYtPQJ pic.twitter.com/hChqt0uPbG
— Reuters (@Reuters) November 3, 2020