জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নজিরবিহীন’ ভাষণের পর তার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের কথার যুদ্ধ নতুন মাত্রা পেয়েছে।
Published : 23 Sep 2017, 12:27 AM
ওই ভাষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘উন্মাদ’ আখ্যায়িত করে কিম এক বিবৃতিতে বলেছেন, এজন্য তাকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে।
পাল্টা জবাবে টুইট করেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, কিম ‘পাগল ছাড়া আর কিছু না’। এমন পরীক্ষায় তাকে তিনি ফেলবেন, যেমনটা কিম কখনও দেখেননি।
গত সপ্তাহে প্রথমবারের মত জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে দাঁড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতাকে আখ্যায়িত করেন ‘রকেটম্যান’ নামে। তিনি বলেন, বাধ্য হলে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করে দেবে।
জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে এই বিশ্ব সংস্থারই আরেক সদস্য দেশের শীর্ষ নেতাকে যে ভাষায় ট্রাম্প সম্বোধন করেছেন, সেই সঙ্গে যে হুমকি তিনি দিয়েছেন, তাকে জাতিসংঘের সাত দশকের ইতিহাসে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন বিশ্লেষকরা।
এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএ শুক্রবার তাদের ‘স্টেট অ্যায়েয়ার্স কমিশনের চেয়ারম্যান’ কিমের ওই বিবৃতি প্রকাশ করে।
পুরো পশ্চিমা বিশ্বের বিপরীতে কার্যত একঘরে হয়ে থাকা উত্তর কোরিয়ার নেতার এভাবে ইংরেজিতে বিবৃতি দেওয়ার ঘটনাও নজিরবিহীন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কিম সেখানে ট্রাম্পের জন্য এমন কিছু অপ্রচলিত ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো রীতিমত গবেষণা শুরু করে দিয়েছে।
Kim Jong Un of North Korea, who is obviously a madman who doesn't mind starving or killing his people, will be tested like never before!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) September 22, 2017
উত্তর কোরিয়া একের পর এক পারমাণবিক বোমা ও ব্যালেস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা শুরুর পর থেকে গত কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের কথার লড়াই চলছে।
কিম তার বিবৃতি শেষ করেছেন এভাবে- “আমি অতি অবশ্যই ওই বিকারগ্রস্ত উন্মাদ বুড়োকে আগুনে পুড়িয়ে বশ মানাবো।”
এই বাগযুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় দুই দেশকেই সতর্ক করে চীন বলেছে, পরিস্থিতিটা এখন যথেষ্ট ‘জটিল আর নাজুক’।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র লু ক্যাং বলেছেন, “পরষ্পরকে উসকানি না দিয়ে সব পক্ষেরই এখন সংযত হওয়া উচিৎ।”
সংযত হওয়ার কথা রাশিয়াও বলেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন ক্রমশ বাড়তে থাকা এই উত্তেজনা নিয়ে মস্কো উদ্বিগ্ন।
কিম জং উন তার বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্পের হুমকিতে তিনি মোটেও ভীত নন, বরং তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, যে পথে তিনি আছেন, সেটাই সঠিক পথ এবং ওই পথেই তাকে চলতে হবে।
অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরদার করতে বৃহস্পতিবার নতুন একটি আদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এর ফলে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য করছে এমন কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।