ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের উপর ‘বৈষম্যমূলক শাসন’ চাপানোর অভিযোগ তুলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর জাতিসংঘের কড়া সমালোচনা করেছে লেবাননের হিযবুল্লাহ নেতারা।
Published : 20 Mar 2017, 01:12 PM
জাতিসংঘের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইএসসিডব্লিউএ) প্রকাশ করা প্রতিবেদনটি ইন্টারনেট থেকে মহাসচিব সরিয়ে নিতে বলার পর শুক্রবার জাতিসংঘের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও ইএসসিডব্লিউএর এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি রিমা খালাফ বলেছেন, ‘শক্তিশালী সদস্য রাষ্ট্রগুলোর’ পক্ষ থেকে এই বিশ্ব সংস্থা ও এর প্রধানের উপর ‘হিংস্র হামলা ও হুমকির’ চাপ আসার পর তিনি পদত্যাগ করেছেন।
হিযবুল্লাহ নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ শনিবার এক টেলিভিশন বক্তৃতায় বলেন, এই ঘটনা জাতিসংঘের বিষয়ে একটি সত্য আবারও মনে করিয়ে দিল যে, ‘এই সংস্থা দুর্বল… এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য’।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ কোনো অবস্থান নিতে অক্ষম এবং প্রতিবেদন ঘিরে এই যে বিপর্যয় তা প্রমাণ করে ‘আমাদের ধর্মে মানবিক অধিকার রক্ষায়’ এই সংস্থার উপর আস্থা রাখা যায় না।
১৮টি আরব রাষ্ট্রভুক্ত ইএসসিডব্লিউএ বুধবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের কোনো অঙ্গসংস্থা স্পষ্টভাষায় এই অভিযোগ আনলো যে ইসরায়েল ‘একটি বৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে সামগ্রিকভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের উপর চেপে বসেছে’।
ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এটাতে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং এই প্রতিবেদন সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিক্বি হেলি বলেছেন, খালাফের পদত্যাগ যথাযথ। আর ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত বলেছে, এটা অনেক আগেই করা উচিত ছিল।
ইএসসিডব্লিউএর প্রতিবেদনের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করে লেখা পদত্যাগপত্রে খালাফ বলেন, “শুধু অপরাধীদের পক্ষেই এটা স্বাভাবিক যে তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের যারা সমর্থন করে তাদের ওপর তারা চাপ দেবে এবং হামলা চালাবে।”
তবে ওই প্রতিবেদন জাতিসংঘ সচিবালয়ের সঙ্গে আলোচনা না করে প্রকাশ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফানে দোজারিক।
শুক্রবার নিউ ইয়র্কে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিষয়বস্তুর জন্য এটা সরানো হয়নি, প্রক্রিয়াগত কারণে এটা করা হয়েছে।
“কোনো আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল বা জাতিসংঘের অধীনস্ত কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা যথাযোগ্য বিভাগ এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা না করে জাতিসংঘের নামে এবং এর লোগো ব্যবহার করে কোনো প্রকাশনা বের করবেন তা মহাসচিব মেনে নিতে পারেন না।”