ওকিনাওয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একাত্তর বছর ফুল আর প্রার্থনায় স্মরণ করেছে জাপান।
Published : 23 Jun 2016, 07:36 PM
বৃহস্পতিবার সকালে ওকিনাওয়া প্রদেশের ইতোমান এলাকায় অবস্থিত স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
স্থানীয় সরকারের এ আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কারলিন কেনেডি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেন নাকাতানি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও স্থানীয় গর্ভনর তাকাশি ওনাগা।
১৯৪৫ সালের বিশ্বযুদ্ধে শুধুমাত্র ওকিনাওয়ায় ২ লাখ ৬৫৬ জন জাপানি মার্কিন সেনাদের হাতে নিহত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরই স্থানীয় অধিবাসী যুদ্ধাগতদের স্মরণ করে আসছে।
সকালে শ্রদ্ধার জানানোর জন্য এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, আমরা অতীত থেকে বাস্তবতার শিক্ষা নিয়েছি। আর তা নিয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাপান এগিয়ে যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে এ স্থানে ‘মার্কিন সেনার হাতে সম্প্রতি এক নারী খুন হওয়ার ঘটনায় স্মরণকালের বৃহৎ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। দুই দশকের বেশি সময় পর জাপানের এ বিক্ষোভে ৬৫ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিল বলে আয়োজকরা দাবি করেছে।
শিনজো আবে হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি একটি ফলপ্রসূ ঘোষণা আসবে।
ওকিনাওয়া মার্কিন নৌঘাঁটি অপসরাণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসছিল এলাকাবাসী। আর এ আন্দোলনের অন্যতম নেতা বিরোধীদলের গর্ভনর তাকাশি ওনাগা।
তিনি স্মরণ সভায় বলেন, আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানিদের ত্যাগ ভুলে যায়নি। এরপরও এখানে কিভাবে মার্কিনরা থাকতে পারে? অবিলম্বে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
১৯৭২ সালে দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী, জাপানকে শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব ছিল মার্কিন সেনাদের ওপর। এরপর জাপান সরকার স্থানীয়দের জমি অধিগ্রহণ করে মার্কিন বেইজ ক্যাম্প তৈরি করে দেয়। আর এজন্য সরকারকে বিশেষ অর্থ বিসর্জনও দিতে হয়।
সম্প্রতি মার্কিন সেনারা সমুদ্র ভরাট করে ফুতেনেমা বিমানবন্দর ও বেইজক্যাম্প সম্প্রাসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু ওকিনাওয়াবাসী এর প্রতিবাদ করে। বিষয়টি আদলত পর্যন্ত গড়ায়।
মার্কিন সেনারা প্রায় হেনকোতে ৭ হেক্টর জমি দখল করে বেইজ ক্যাম্প করেছিল। যার মধ্যে চার হেক্টর জমিতে ফুতেনেমা এয়ার স্টেশন রয়েছে।
১৯৯৬ সালে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে হওয়া চুক্তির অংশ হিসেবে প্রদেশটির ওনাগা জেলার হেনকো সামুদ্রিক এলাকায় নৈ-সেনাদের আবাসন ও প্রশিক্ষণের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। শুরুতে কিছুটা এগুলেও গত কয়েক বছর ধরে সীমাবদ্ধ এলাকার মধ্যে মার্কিন নৌবাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার সেনা অবস্থান করে।