সু চির বাড়ি নিলামে, কিনল না কেউ

ছবি: রয়টার্স।

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত কারান্তরীণ গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির বাড়ি বিক্রির জন্য বুধবার নিলামের আয়োজন করা হলেও মেলেনি কোনও ক্রেতা।

বাড়িটি বিক্রি করার জন্য প্রাথমিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় ৯ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু কেউ তা কিনতে আসেনি বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ইয়াঙ্গুনের ইনয়ে হ্রদের পাশে সু চির পারিবারিক এই বাড়িটি প্রায় ১ দশমিক ৯২ একর জমির ওপর অবস্থিত।

বাড়ির ভাগ নিয়ে সু চির সঙ্গে তার ভাই অং সান ও’ এর মধ্যে কয়েক বছরের আইনি লড়াইয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট জানুয়ারিতে সেটি বিক্রির নির্দেশ দেয়। সে নির্দেশ মেনেই বাড়িটি নিলামে তোলা হয়েছিল।

আদালতের কর্মকর্তারা বাড়ির সামনের ফটকের বাইরে সকাল ১০ টা থেকেই উপস্থিত ছিলেন। নিলাম শেষ করার আগে তিনবার তারা ক্রেতার জন্য ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। নিলামস্থলে কেবল সাংবাদিক ও কর্মকর্তারাসহ সাধারণ পোশাকের পুলিশ উপস্থিত ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, "আজ কোনও ক্রেতা না আসায় নিলামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা চলে গেছেন।"বিবিসি বার্মিজও এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সু চির ভাই অং সান ও’র সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্রের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য চাওয়া হলেও তিনি এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি।

নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি বেশ কিছু মামলায় মিয়ানমারের একটি অজ্ঞাত স্থানে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। কিন্তু সু চির সমর্থকরা বলছে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বানোয়াট।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই সু চি কারাগারে আছেন। সু চির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। কয়েকটি মামলায় তিনি সাজাও পেয়েছেন।

সু চি যুক্তরাজ্য থেকে মিয়ানমারে ফিরে আসার পর তিন দশকের বেশি সময়ের বেশিরভাগই তার বাড়িতেই কাটিয়েছেন। মিয়ানমারের পূর্ববর্তী জান্তা সরকারের অধীনে ১৫ বছর গৃহবন্দী সময়ও এ বাড়িতেই কেটেছে তার।

সু চির বাবা জেনারেল অং সানকে ১৯৪৭ সালে হত্যা করা হয়। তিনি মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক ছিলেন। তার মৃত্যুর পর সু চির মা খিন খিয়ির তত্ত্বাবধানে ছিল বাড়িটি।

২০০০ সালে পারিবারিক এই বাড়ির ভাগ চেয়ে মামলা করেন সু চির ভাই অং সান ও। ২০১৬ সালে এ মামলার রায়ে আদালত পুরো সম্পত্তি ভাই বোনের মধ্যে সমানভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেয়।

অং সান ও বাড়িটি নিলামে বিক্রি করার জন্য আদালতে কয়েকবার আবেদন জানিয়ে ব্যর্থ হন। বিষয়টি নিয়ে সু চি এবং তার ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্বও বাড়ে। পরে ২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সুপ্রিম কোর্ট অং সান ও’ এর বিশেষ আপিলের পক্ষে রায় দিয়ে বাড়িটি নিলামে বিক্রির আদেশ দেয়।