বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন একজন অনুসন্ধান কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে।
Published : 22 Aug 2019, 01:45 PM
তবে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের বিরুদ্ধে ঠিক কী কী অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না দুদকের কেউ।
খায়রুল হোসেনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর খবর আসার পর বুধবার দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
উত্তরে তিনি বলেন, “অনুসন্ধানের বিষয়তো আমি দেখি না, অন্যরা দেখে। আমি কিছু জানি না।”
এ বিষয়ে কথা বলতে বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীকে বিষয়টি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দিয়ে গত ৭ অগাস্ট একটি চিঠি দেন কমিশনের পরিচালক (মানি লন্ডারিং) ও বিকল্প পরিচালক (গোয়েন্দা ইউনিট) গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী।
‘অতীব গোপনীয়’ ওই চিঠির বিষয়ের জায়গায় বলা হয়েছে, “ড. এম খাইরুল হোসেন, চেয়ারম্যান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গোষ্ঠীর যোগসাজশে দুর্বল কোম্পানির শেয়ার (ইনিশিয়াল পাবলিক অফার -আইপিও) অনুমোদন করিয়ে শেয়ার বাজারে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগ।”
আর চিঠিতে বলা হয়, “উপযুক্ত বিষয়ে সূত্রস্ত নথিতে রক্ষিত অভিযোগসমূহের বিষয়ে অতীব গোপনে তথ্য সংগ্রহপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নিমিত্ত আপনাকে (মামুনুর রশীদ চৌধুরী) অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
“উক্ত সিদ্ধান্তের আলোকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অতিদ্রুত গোপনীয়ভাবে অসুসন্ধানকার্য সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।”
অনুসন্ধানের দায়িত্ব পাওয়া কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ চৌধুরী এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ‘এ বিষয়ে কিছু জানা নাই’ বলে প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
চলতি বছরের শুরু থেকে টানা দরপতনের মধ্যে পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। দুর্বল কোম্পানিকে তালিকাভুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে বাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ।
তাদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ৩০ এপ্রিল নতুন আইপিও আবেদন বন্ধ রাখার আদেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বিএসইসির চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
বিএসইসির মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে তার ‘কিছু জানা নেই’। ফলে কোনো মন্তব্য তিনি করবেন না।
আট বছরের বেশি সময় ধরে বিএসইসির দায়িত্ব পালন করে আসা খায়রুল হোসেন প্রথম তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান ২০১১ সালের ১৫ মে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের এই অধ্যাপক যখন নিয়োগ পান, তখন বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সবচেয়ে অস্থির সময় অতিক্রম করছিল।
এরপর ২০১৪ সালে চার বছরের জন্য এবং ২০১৮ সালে দুই বছরের জন্য তার মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পুঁজিবাজারে অস্থিরতার মধ্যে সরকার বিভিন্ন ধরনের নীতি প্রণয়ন, ডিমিউচুয়ালাইজেশনসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কার নিয়ে এলেও বাজার স্থিতিশীল করা যায়নি বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করে আসছেন।
পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সম্প্রতি বিএসইসি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে।