২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেকর্ড রেমিটেন্স আসার পর প্রতিবছরই কমছে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ; এবছর তা আরও কমবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রিফুইজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)।
Published : 28 Dec 2017, 07:36 PM
তারা বলেছে, গত বছরের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) তুলনায় এবার রেমিটেন্স শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ কম আসতে পারে। গত বছর রেমিটেন্স এসেছিল ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার।
ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন রেমিটেন্স প্রবাহে প্রভাব ফেলেছে বলে রামরুর পর্যবেক্ষণ। বেসরকারি এই ব্যাংকটির মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে।
তবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসির দাবি, রেমিটেন্স আসলে কমেনি, তবে বৈধ পথে আসছে না বলে তার হিসাবে ধরা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো এই বৈদেশিক মুদ্রা। ফলে রেমিটেন্সে অধঃগতি অর্থমন্ত্রীর কপালেও ভাঁজ ফেলছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের গতি প্রকৃতি ২০১৭: সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে রামরু চেয়ারম্যান ড. তাসনিম সিদ্দিকী রেমিটেন্স কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানান।
তিনি বলেন, চলতি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরো বছরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থের পরিমাণ সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার হতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ১১ কোটি ডলার বা ০.৮ শতাংশ কম হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এ বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রবাসীরা ১ হাজার ২৩৭ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।
এবছর বরাবরের মতোই সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। রেমিটেন্সের ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ পাঠিয়েছেন সৌদি প্রবাসীরা। এরপর রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৫.৯৭ শতাংশ), যুক্তরাষ্ট্র (১৩.৭৭ শতাংশ), মালয়েশিয়া (৭.৫৩ শতাংশ) এবং যুক্তরাজ্য (৭.৩৮ শতাংশ)।
তিনি বলেন, “ইসলামী ব্যাংকে পরিবর্তন আনার আগে দেশে আসা রেমিটেন্সের প্রায় ৩০ শতাংশ আহরণ করত ব্যাংকটি। কিন্তু এবছর ইসলামী ব্যাংক মাত্র ১৯ শতাংশ রেমিটেন্স আহরণ করেছে।”
কেন এমন হল- এক সাংবাদিকদের প্রশ্নে রামরু চেয়ারম্যান বলেন, “এ পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। হতে পারে এ ভাঙা-গড়ার মধ্যে ব্যাংকটিতে রেমিটেন্স আহরণ কার্য়ক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
ইসলামী ব্যাংকের পরে বেশি রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংকগুলো হচ্ছে অগ্রণী ব্যাংক (৯.৭৯ শতাংশ), সোনালী ব্যাংক (৭.৮২ শতাংশ), জনতা ব্যাংক (৬.৪৪ শতাংশ) এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংক (৫.৩৫ শতাংশ)।
রেমিটেন্স কমে যাওয়ার জন্য হুন্ডি ও সোনা চোরাচালানকে চিহ্নিত করেছেন রামরু চেয়ারম্যানও।
তিনি আরও বলেন, “এলসি ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিং আরেকটি কারণ হতে পারে।”