আরও বড় পরিসরে টিকাদান কর্মসূচি চালানোর জন্য কোভিড টিকার পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন দেওয়া হলে এবং এখনও বাকি থাকা আট থেকে নয় কোটি নাগরিককে টিকার আওতায় আনা গেলে, আগামী বছরের শুরুর দিকেই যুক্তরাষ্ট্র কোভিড মহামারী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবে বলে আশা করছেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি।
Published : 25 Aug 2021, 01:03 AM
ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষের (এফডিএ) পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পাওয়ার পরদিন মঙ্গলবার কয়েকটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাউচির এমন বক্তব্য এসেছে।
রয়টার্স লিখেছে, ফাইজারের টিকা পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পাওয়ায় এখন আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনার সুযোগ তৈরি হল। মডার্না আর জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকাও শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পেয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসছে হেমন্তে শিশুদের টিকা দেওয়ার অনুমতিও হয়ত মিলে যাবে।
এনবিসি নিউজের ‘টুডে’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাউচি বলেন, “যে আট বা নয় কোটি মানুষ এখনও টিকার বাইরে রয়েছেন, যারা টিকা নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বা সুযোগ পাচ্ছেন না, তাদের বড় অংশকে যদি আমরা টিকা দিয়ে ফেলতে পারি, আমার বিশ্বাস, শেষ পর্যন্ত আমরা আশার আলো দেখতে পাব।… আমরা এ পরিস্থিত বদলে দিতে পারব।”
স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শীর্ষ উপদেষ্টা ফাউচি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজজেস এর প্রধান।
এমএসএনবিসিকে তিনি বলেছেন, মডার্না আর জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকা তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যেই এফডিএর পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পেয়ে যাবে বলে তার ধারণা। হয়ত কয়েক সপ্তাহ বা এক মাসের মধ্যেই সেটা হয়ে যাবে।
বছরের শেষে ছুটির মওসুম শুরু হয়ে যাওয়ার আগেই কম বয়সীদের জন্য ফাইজার আর মডার্নার টিকা দেওয়ার অনুমোদন মিলে যাবে বলে মনে করছেন ফাউচি। এনবিসি নিউজকে তিনি বলেছেন, হেমন্তের শেষে বা শীতের শুরুতেই সেটা হয়ে যেতে পারে।
আর সিএনএনকে তিনি বলেছেন, “যদি আমরা শীতের মধ্যেই অনুমোদন পেয়ে যাই, আর যে নয় কোটি মানুষ এখনও টিকা পায়নি, তাদের অধিকাংশকে টিকা দিতে পারি, আমার বিশ্বাস, ২০২২ সালের বসন্তে পরিস্থিতির ওপর ভালো একটা নিয়ন্ত্রণ আমরা পেয়ে যাব।”
তবে সিএনএন এক বিশ্লেষণে লিখেছে, ফাউচির এই আশার বাণী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য হতাশার খবর হয়েই এসেছে, যিনি চলতি বছরের শুরুতে দায়িত্ব নিয়েছেন মহামারীর অবসান ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে।
এখন মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য যদি আগামী বসন্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত আরও অনেক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঝঞ্ঝা তাকে পার হতে হবে।
মহামারী জয় করে অর্থনীতিতে গতি তুলে বিজয়ীর বেশে আগামী বছরের নভেম্বরে কংগ্রেস নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সেরা পরিকল্পনাটাই বাইডেন সাজিয়েছিলেন। কিন্তু ফাউচির কথা সত্যি হলে তার সেই পরিকল্পনাও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।