ই-কমার্স, অনলাইন পেমেন্টসহ যাবতীয় ইন্টারনেট লেনদেনে শৃঙ্খলা আনতে শিগগির নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার বলে মত দিয়েছেন একটি আলোচনায় অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ী নেতারা।
Published : 08 Feb 2017, 07:03 PM
বুধবার ঢাকায় ‘মোবাইল ব্যাংকিং, ফিন্যান্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ইস্যু’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে রেগুলেশন প্রণয়নে আরও কয়েকটি সেমিনার আয়োজনের পরামর্শও দেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও ফ্রেডরিখ নু্উম্যান ফাউন্ডেশন বা এফএনএফ যৌথভাবে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
এতে এফবিসিসিআই মহাসচিব মীর সাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ, ফ্রেডরিখ নুউম্যান ফাউন্ডেশনের সাউথ এশিয়া অঞ্চলের ব্যবস্থাপক রোবেন ডিকফ, এফবিসিসিআইর আইসিটি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এটিএম মাহবুবুল আলম, বিকাশের সিইও কামাল কাদির, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক শাফকাত হায়দার, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেইমেন্ট সিস্টেম বিভাগের জিএম লীলা রশিদ বক্তব্য রাখেন।
এফবিসিসিআই পরিচালক শামীম আহসান ‘মোবাইল ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্স’ শীর্ষক মূল আলোচনা উপস্থাপনা করেন।
পরে এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদের সঞ্চালয় মুক্ত আলোচনা হয়। এতে এফএনএফের কান্ট্রি ডিরেক্টর নাজমুল হোসাইন, বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
রিগার ভেনসেন বলেন, ই-কমার্সের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা নিয়ে একেক দেশ একেক রকম চিন্তা ভাবনা করছে। তবে ই-কমার্সের জন্য রেগুলেশন থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এফবিসিসিআইর আইসিটি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এটিএম মাহবুবুল আলম বলেন, সাইবার নিরাপত্তাসহ নানা দিক বিবেচনায় সিম কার্ড বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। এ ধরনের আরও অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিকাশ, রকেট, পস মেশিন, অনলাইন পেইমেন্টসহ নানাভাবে এখন অনলাইনে কেনাকাটা হলেও ‘মানি ট্রানজেকশন’ তদারকি করতে সরকারের উদ্যোগ স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য তার।
বিকাশের সিইও কামাল কাদির বলেন, অনলাইন মানি ট্রানজেকশনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের অনেক কিছুই করার আছে। তবে এখানে সরকারকেও কিছু করতে হবে।
ই কমার্স, মেবাইল ব্যাংকিং কিংবা মোবাইল ফিন্যান্সের বাজার প্রতিযোগিতামূলক মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেইমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহা ব্যবস্থাপক লিলা রশিদ বলেন, সব পক্ষকে সমান সুযোগ দিলেই কেবল একটা রেগুলেশন সম্ভব।
অনলাইন মানি ট্রানজেকশনের ওপর কিছু নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে বলে জানান বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার।
তিনি বলেন, “অনিয়ম বিশঙ্খলা সব জায়গাতেই হয়, তবে সেজন্য লেনদেনের পরিসীমা এভাবে কমানোর যৌক্তিকতা নেই। সমস্যা হলে এর সমাধানও আছে। মানি লন্ডারিংয়ের দায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর চাপিয়ে দিলে অন্যান্য কারণগুলো চাপা পড়ে যাবে।”
টেলিকম অপারেটরগুলো একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে দাবি করে বেসিস সভাপতি বলেন, সরকার ইন্টারনেটের দাম কমালেও টেলকোর লোকজন কমাচ্ছে না। তারা একই সঙ্গে সব ব্যবসায় হস্তক্ষেপ করে এক ধরনের অসম পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
দেশে কোনো ই-কমার্স পলিসি নেই জানিয়ে আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, “এগুলো হঠাৎ করে করা সম্ভব না। আর কোনো প্রতিষ্ঠানকে স্ব উদ্যোগে যে পলিসি করার কথা বলা হচ্ছে তাও সম্ভব নয়। কারণ সরকারি অংশীদারিত্ব ছাড়া কোনো রেগুলেশন হয় না।
ই-কমার্স ও মানি ট্রান্সফার সিকিউরিটি সিস্টেম দাঁড় করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কিছু করার আছে বলে মত দেন তিনি।