এবার এসএসসি পরীক্ষার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের প্রশ্ন আগের রাতেই ফাঁস হওয়ার তথ্য ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানানোর পরও ওই প্রশ্নেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
Published : 20 Feb 2017, 09:02 PM
সোমবার সকাল ১০টায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা শুরু হয়। যে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে, তা আগের রাতে হোয়াটস অ্যাপে পাওয়া প্রশ্নের হুবহু।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বোর্ডের গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রীসহ কর্মকর্তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বরিশাল ও ঢাকা বোর্ডের শারীরিক শিক্ষা এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা বোর্ডের পদার্থ বিজ্ঞানের প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগের রাতেই ফাঁস হয়।
কিন্তু প্রথম বারের পর থেকে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাতে কান দিচ্ছেন না। আগের মতো পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রীর অনীহাও স্পষ্ট।
রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পরিচালিত ‘হ্যালো'র এক শিশু সাংবাদিক হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ঢাকা বোর্ডের প্রশ্ন পাওয়ার পর সোমবার সকাল ৮টায় তা ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃবোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির আহ্বায়ক তপন কুমারকে জানানো হয়েছিল।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের পর তপন কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পরে বললে ব্যবস্থা নেব কী করে! আগে জানাবেন।”
এবার পরীক্ষা শুরুর দুই ঘণ্টা আগে জানানো হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেকে ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে, আমি এখনি অফিসে গিয়ে দেখছি কী হয়েছে।”
রাতে পাওয়া প্রশ্নের স্ক্রিনশট পাঠাতে চাইলেও তিনি অনাগ্রহ দেখান এবং নিজের ইমেইল ঠিকানাও তিনি দেননি।
হ্যালো প্রতিবেদকের কাছে Tasmiya Akther Jui নামে একটি ফেইসবুক আইডি থেকে সকাল ৮:৪৫ এ আরেক সেট প্রশ্ন আসে ফেইসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে।
এটা জানানোর জন্য তপন কুমারকে অনেকবার কল করা হলেও তিনি আর ফোন ধরেননি।
সকাল ১০ টা থেকে ১০:২৫ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া ঢাকা ও বরিশাল বোর্ডের এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে সকাল ৮:৪৫ এ ফেইসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে পাওয়া প্রশ্ন হুবহু মিলে যায়।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরও সারাদিন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমারকে একাধিক নম্বার থেকে অনেকবার ফোন করা হলেও তিনি এরপর আর ফোন ধরেননি।
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি একটি ট্রেইনিংয়ে আছি, আমি কিছুই জানি না। অফিসে গিয়ে কন্ট্রোলারের সাথে কথা বলে জানাব।”
এরপর মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলার জন্য তাকে পাওয়া যায়নি।
শিক্ষামন্ত্রী নাহিদও ফোন ধরেননি।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক প্রশ্ন ফাঁসে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাহলে কি তারাই চান প্রশ্ন ফাঁস হওয়া অবাধে চলতেই থাকুক! আমাদের সন্তানের মেরুদণ্ড গোড়াতেই ভেঙে দেওয়ার জন্য তো তবে তারাই দায়ী।”