‘থ্যাংক ইউ পিএম’ বিজ্ঞাপনে বিধি লঙ্ঘন হচ্ছে: বিএনপি

ভোটের মওসুমে টেলিভিশনে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে যেসব বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে তাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2018, 07:14 AM
Updated : 14 Nov 2018, 09:04 AM

দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ‘থ্যাংক ইউ পিএম’ শিরোনামের এসব বিজ্ঞাপনের প্রচার অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “টিভি খুললেই দেখবেন অনেক চ্যানেলে ‘থ্যাংক ইউ পিএম’ এর বিজ্ঞাপন চলতে থাকে। কিছুক্ষণ খেয়াল করলে বোঝা যাবে বিজ্ঞাপনদাতা হচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়। কী উন্নয়ন হয়েছে সেটা দেখিয়ে বাচ্চা ছেলেসহ বিভিন্নজনকে দিয়ে বলানো হয় থ্যাংক ইউ পিএম।”

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে রিজভী প্রশ্ন করেন, “নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারে বিধি লঙ্ঘণ হচ্ছে কি?

“আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলতে চাই, নির্বাচন সামনে রেখে এখন কেন সরকারি অর্থে এই ধরনের প্রচার চালু রাখা হচ্ছে? এর  মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারে সমান সুযোগের বিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে সরকারি টাকায় আওয়ামী লীগের পক্ষে এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।”

নির্বাচন কমিশন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে দুমুখো আচরণ করছে অভিযোগ তরে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “এসব ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এক চোখ বন্ধ হয়ে যায়… এটা (তারা) দেখেন না। থ্যাংক ইউ পিএম দেখে আরব্য উপন্যাসের দৈত্যের মত ভূমিকা পালন করছেন সিইসি ও কতিপয় কমিশনার। তারা এসব দেখেও না দেখার ভান করছেন।”

“আর (বিএনপির) দলীয় কার্যালয়ে সামনে যখন প্রাণের আকুতি নিয়ে নেতা-কর্মীরা ফরম তোলার জন্য আসছে…. ওরা আসতে পারবে না। কারণ সরকার ও তাদের আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনের কতিপয় কমিশনারের সবচেয়ে বড় ভয় জনগণকে নিয়ে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে আজ্ঞাবাহী কমিশনাররা সেভাবে কাজ করতে পারবে না। এ কারণে ব্যাপক মানুষের উপস্থিতিতে ওরা বিচলিত হয়ে পড়ে।”

রিজভী অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন অসন্ন নির্বাচনের সময়ে গণমাধ্যমও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এ কারণে ভোট কেন্দ্র থেকে টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

“নিয়ন্ত্রণের যত ধরনের খড়্গ, নিয়ন্ত্রণের যত ধরনের ধারালো তরবারি প্রদর্শন করা দরকার সেটাই হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের এই বিধানগুলো। এটা হচ্ছে ভয়াবহ ও প্রকট স্বৈরতন্ত্রের বিধান। অথচ গণমাধ্যম ও ভোট সম্পূরক সত্তা, যদি আমরা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করি।”

নির্বাচনের সময় ‘গণমাধ্যমে’ সকল রাজনৈতিক দলের সমান প্রচারের দাবি জানান রিজভী।  

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি গাইবান্ধা, ঢাকা, খুলনা, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের তালিকা তুলে ধরে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।

অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, শাহ মো. আবু জাফর, মুনির হোসেন, মীর আলী নেওয়াজ আলী, সাইফুল ইসলাম পটু, জয়পুরহাটের নেতা জাসাস সহসভাপতি জাহেদুল আলম (হিটো) সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

গত কয়েক দিনের মত বুধবারও সকাল থেকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ভিড় করেছেন দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনতে আসা নেতাকর্মীরা। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে স্লোগানও দিচ্ছেন।

আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত নয়া পল্টনের কার্যালয়ে বিএনপির মনোনয়ন মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।