মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ’র সাইবার কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্যে অ্যাকসেস পাবে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো, সম্প্রতি সিআইএ হ্যাকিং টুল নিয়ে তথ্য ফাঁস করে নতুন আলোচনার জন্ম দেওয়া সাইট উইকিলিকস-এর পক্ষ থেকে এমনটা জানানো হয়েছে।
Published : 10 Mar 2017, 04:09 PM
বিভিন্ন রাষ্ট্র ও গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তথ্য ফাঁসকারী এই সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জানান, কিছু বিষয়ে ভাবার পর তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এরপর থেকে এ ধরনের ফাঁসের তথ্য সবার আগে প্রযুক্তি সম্প্রদায়ের কাছে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “এই উপাদান একবার কার্যকরীভাবে নিরস্ত্র হয়ে গেলেই, আমরা আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করব।”
এই তথ্য ফাঁসের বিষয়ে একটি অপরাধ তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো। এ নিয়ে সিআইএ মুখপাত্র হেথার ফ্রিটজ বিবিসি-কে বলেন, “আমরা আগে যেমনটা বলে এসেছি, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ একেবারে বিশুদ্ধতা আর সত্যের ঘাঁটি নয়।” সেই সঙ্গে সিআইএ আমেরিকাকে সন্ত্রাস ও বিরোধী রাষ্ট্রগুলোর হাত থেকে রক্ষা করতে আগ্রাসীভাবে বৈদেশিক তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।
মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমরা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ-এর বিবৃতি দেখেছি আর এখনও তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। সিআইএ বা উইকিলিকস, নিরাপত্তা বিষয়ে জ্ঞান রাখেন এমন যে কারও জন্য আমাদের পরামর্শ হচ্ছে ([email protected])- এই অ্যাড্রেসে তাদের বিস্তারিত তথ্য পাঠানো, যাতে আমরা এই তথ্য যাচাই করে আমাদের গ্রাহকদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারি।”
তথ্য ফাঁসের প্রথম ধাপে উইকিলিকস অভিযোগ করে সিআইএ “সাধারণ মানুষ ব্যবহার করেন এমন সব সিস্টেম”-এ আক্রমণের জন্য ম্যালওয়ারের “একটি বিশাল অস্ত্রাগার (নামটি অ্যাাসাঞ্জ-এর দেওয়া)” বানিয়েছে। সিআইএ তৈরি করে থাকতে পারে এমন ম্যালওয়্যারগুলোর সঙ্গে লড়াইয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দুই প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল ও অ্যাপল।
অ্যাসাঞ্জ বলেন, “তার সংস্থার কাছে সাইবার-অস্ত্র কার্যক্রমের বিষয়ে আরও অনেক তথ্য আছে।” তিনি জানান, অধিকাংশ ফাঁসের ক্ষেত্রে উইকিলিকস নিরপেক্ষ অবস্থান নিলেও, এ ক্ষেত্রে এটি একটি দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের যোগাযোগ প্রযুক্তি নিরাপদ করতে চাই কারণ, এটি ছাড়া সাংবাদিকরা রাষ্ট্রকে জবাবদিহিতায় রাখতে পারবে না।”
অ্যাসাঞ্জ দাবি করেন, উইকিলিকস-এর হাতে তথ্যের অ্যাকসেস চলে যাওয়ার বিষয়টি গুপ্তচর সংস্থাটি কয়েক সপ্তাহ ধরে জানত, কিন্তু তারা এ নিয়ে কিছু করেনি।
‘আমব্রেইজ’ কার্যক্রমের বিষয়েও বলেছেন তিনি। এই ফাঁসের প্রথম পর্যায়ে এই কার্যক্রম সম্পর্কে জানানো হয়। এটি হচ্ছে এমন এক ব্যবস্থা যেখানে লোকজনের কাছ থেকে এমন তথ্য নেওয়া হয় যে তারা মনে করবেন তারা হয়তো রাশিয়ার মতো রাষ্ট্র বা ভিনদেশি দলের হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন।
“জবাবদিহিতা না রাখার জন্যই এই প্রযুক্তি বানানো হয়েছে”, বলেন তিনি।
মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাটি প্রযুক্তি খাতের “শতকোটি ডলার ক্ষতি” করতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন অ্যাসাঞ্জ।