হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতার নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে মূল ধারা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 13 Apr 2016, 06:12 PM
ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক মশাল তাদেরই থাকল। শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাসদকে আলাদাভাবে নিবন্ধন এবং প্রতীক নিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাসদ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইনু পাবে মশাল প্রতীক-এটাই সিদ্ধান্ত। আমাদের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত রোববারের মধ্যে দলও জানতে পারবে।”
দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন চলার মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সম্মেলনের পর বিভক্ত জাসদের দুই অংশই মশাল প্রতীক চেয়ে ইসির কাছে আবেদন জানায়।
দুই পক্ষের শুনানির এক সপ্তাহ পর বুধবার সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিউদ্দীন আহমদ চার নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে এই জটিলতার ইতি টানতে বসেন।
দুপুরে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, “জাসদ নিয়ে সিদ্ধান্ত আসছে। আজ-কালের মধ্যে আপনাদের জানাব।”
বিকালে শেরেবাংলানগরে ইসি কার্যালয় ছাড়ার আগে নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা চার নির্বাচন কমিশনারই মতামত দিয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এরপর নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ জানান, চার নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে চলা জাসদের প্রতীক নিয়ে লড়াইয়ে ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদ এর আগেও ইসির স্বীকৃতি পেয়েছিল। ফলে জাসদের অন্য অংশগুলোকে মশাল ছেড়ে ভিন্ন প্রতীক নিতে হয়।
ইসির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মো. শাহনেওয়াজ, জাবেদ আলী ও আবু হাফিজ মশাল প্রতীক ইনুকে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক এ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ না করলেও জটিলতার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
জাসদের যে ছয়জন দশম সংসদে রয়েছেন, তাদের চারজনই বিদ্রোহী অংশের বলে আম্বিয়ার দাবি। তারা হলেন- মইন উদ্দীন খান বাদল, নাজমুল হক প্রধান, লুৎফা তাহের ও রেজাউল করিম তানসেন।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ রাখা তথ্যমন্ত্রী ইনুর পাশাপাশি শিরীন আখতার সংসদ সদস্য রয়েছেন। তারা দুজনই নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন।
অন্য পক্ষের বাদলও নৌকায় পান হন। তবে নাজমুল হক প্রধান ও রেজাউল করিম তানসেন মশাল প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। লুৎফা সংরক্ষিত আসনের সাংসদ।
মোবারকের বক্তব্য, যেহেতু দুজন মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, এখন তাদের দলের প্রতীক মশাল না থাকলে তাদের সংসদ সদস্য পদ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
এই জটিলতার কথা ইসির শুনানিতে বাদলও জানিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশন ইনুর পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলে আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার আভাসও দিয়েছিলেন তিনি।
আম্বিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিদ্ধান্ত আমাদের পক্ষে না এলে পরবর্তী করণীয় নিয়ে কমিটি বসবে।”
ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদের এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঐক্যের পথ খোলা। যারা কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে গেছেন, তারা এলেই সম্মানজনক পদেই রাখা হবে।”
দুই অংশ ঐক্যবদ্ধ হলে জাসদ নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে।