দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতের রায়কে ‘একতরফা’ বলেছে বিএনপি।
Published : 20 Oct 2015, 09:03 PM
মঙ্গলবার রায়ের পর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।
তিনি বলেন, “গোটা বিচার প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য ছিল সাদেক হোসেন খোকাকে হয়রানি করা, তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা।
“এই বিচার প্রক্রিয়া অস্বাভাবিক গতিতে সম্পন্ন হয়েছে। তাকে (খোকা) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে আদালত একতরফা রায় দিয়েছে। আমরা মনে করি, এটা বিচারের নামে একটা প্রহসন।”
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি মামলার রায়ে মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত খোকাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
খোকা অবৈধভাবে ১০ কোটি ৫ লাখ ২১ হাজার ৮৩২ টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন ঘোষণা করে, ওই সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে।
রিপন বলেন, “অনেক রাজনৈতিক মামলার মধ্যে এই মামলাটি স্থগিত ছিল। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং সাদেক হোসেন খোকার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে মামলাটি তারা (সরকার) পুনরুজ্জীবিত করে।
“যে মুহূর্তে আইন অনুযায়ী তিনি (খোকা) বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন আইনের অনুমোদন নিয়ে। এই সুযোগটিকে সরকার তাকে পলাতক দেখিয়ে তার পৈত্রিক ও তার দান করা সম্পত্তিকে এবং যে সম্পত্তিতে তিনি শতকরা ১ দশমিক ৮৭ ভাগ মালিক, সেগুলোকে ৭৫% দেখিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে তাকে ১৩ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”
আরও মামলা মাথায় নিয়ে বছর খানেক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খোকা।
সরকারের ‘আজ্ঞাবহ’ দুর্নীতি দমন কমিশন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে খোকার মামলাটি এগিয়ে নিয়েছে বলে দাবি রিপনের। আদালতও তড়িঘড়ি বিচার করেছে বলে তার অভিযোগ।
রিপন বলেন, “সাদেক হোসেন খোকা আইনের চোখে কোনোভাবে পলাতক নন। উচ্চ আদালত তাকে বিদেশে যেতে যেমন অনুমতি দিয়েছেন, তেমনি দেশে ফিরতে তাকে কোনো বাধা না দিতে নির্দেশও দিয়েছেন।
“যেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার চাকরি দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়, সেখানে একজন অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা যিনি কিডনি ক্যান্সারে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, ৬ মাসের সময় প্রার্থনা করেও নিম্ন আদালত থেকে তিনি মঞ্জুরি পাননি।”
খোকার গোপীবাগ ও গুলশানের সম্পত্তির বিষয়ে রিপন বলেন, “যে অবৈধ সম্পত্তির কথা আদালত বিবেচনায় নিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক। গোপীবাগে যে সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে, এটি ২০০৪ সালে মসজিদের জন্য জনাব খোকা ওয়াকফ করে দিয়েছেন। অথচ ওই সম্পত্তিকে তার সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
“গুলশানের পাঁচ কাঠার যে জমিটি অবৈধ সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তা মূলত মানিকনগরের সরকারের অধিগ্রহণ করা পৈত্তিক সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ হিসেবে জনাব খোকা পেয়েছেন।”
সংবাদ সম্মেলনে রিপনের পাশে ছিলেন শামসুজ্জামান দুদু, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সাদেক হোসেন খোকার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া, মহসিন মিয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন, তকদির হোসেন জসিম, শিরিন সুলতানা, শায়রুল কবির খান প্রমুখ।