বিশেষজ্ঞরা বলছেন পিৎজা খাওয়া যাবে। তবে দোকানের সরবারহ করা চর্বিযুক্ত পিৎজা নয়। খেতে হবে বাসায় তৈরি ফ্রেশ বা টাটকা পিৎজা।
Published : 17 Feb 2015, 04:18 PM
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এক টুকরা সসেজ পাইয়ে ১৪ গ্রাম ফ্যাট থাকে। আর শিশুদের সলিড ফ্যাট গ্রহণ করার অন্যতম উৎস হচ্ছে পিৎজা। তাছাড়া চর্বির দিক থেকে পিৎজা অনেকটা ফাস্ট ফুডের সমকক্ষ।
“তাই একই সময়ে কয়েক টুকরা পিৎজা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ এতে লবণ ও চর্বিতে বোঝাই থাকে।” বলেন, এই গবেষণার লেখক ও শিকাগোর ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়’য়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক লিসা পাওয়েল।
২০১৫ সালে করা এই গবেষণায় তিনি দেখতে পান, শিশুরা যখন পিৎজা খায় বিশেষ করে ফাস্ট ফুড ধরনের পিৎজা তখন তারা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ক্যালোরি, স্যাচারেইটেড ফ্যাট এবং সোডিয়াম গ্রহণ করে থাকে। এক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করতে পিৎজার সঙ্গে বেশি করে সালাদ খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
“পছন্দ করুন আর নাই করুন, পিৎজা আসলে ভূমধ্যসাগরীয় খাবার।” জানান ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন’য়ের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি কেন্দ্রের পরিচালক ড. অ্যাডাম ড্রিওনউস্কি।
তাই পিৎজা কে ‘ওপেন ফেইসড’ বা মুখ খোলা স্যান্ডউইচ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “যারা পাইয়ের সঙ্গে আনারস খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য পিৎজা হচ্ছে হোল গ্রেইন, পনির, টমেটো, সবজি এমনকি ফলের বাহন স্বরূপ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন পনির ও টমেটোতে সম্ভাব্য অনেক পুষ্টি আছে। কারণ টমেটো তাপ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আর কাঁচাটমেটোর তুলনায় প্রক্রিয়াজাত টোমেটোতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে, ২০১৫ সালের করা এক গবেষণায় এই তথ্য জানা যায়।
তাছাড়া টমেটো গরম করলে এর কোষ প্রাচীর ভেঙে যায় এবং টমেটোর ক্যারটিনয়েড (সবজি বা ফলের রং নির্ধারিত হয় যে রঞ্জক দিয়ে) যেমন লাইকোপেন (সবজি বা ফলের লাল বর্ণের রঞ্জক) বের হয়ে যায়।
আর “এইভাবে তাদের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়”, জানান এই গবেষণার লেখক এবং ইউনিভার্সিটি অব বার্সেলোনার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গবেষক ও সহকারী অধ্যাপক রোজা এম. লামুয়েলা-রাভেন্তোস।
মাঝে মাঝে প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের জন্য ভালো।
স্কটল্যান্ডের একদল গবেষক পুষ্টির দিক থেকে সম্পূর্ণ ঠিক থাকবে এবং মানুষ খেতে পছন্দ করবে এমন ধরনের পিৎজা তৈরি করার চেষ্টা করেন।
ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগো স্কুল অব মেডিসিন’য়ের পুষ্টি বিষয়ের শিক্ষক ডা. এমিলি কমবেট, ফাইবার বা আঁশে ভরপুর থাকবে তবে লবণ ও স্যাচারেইটেড ফ্যাট কম থাকবে এমন পাই তৈরি করতে সাহায্য করেন।
৭৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আর অবাক হলেও সত্যি প্রায় ৮১ শতাংশ শিশু, সাধারণত যে ধরনের পাই খাওয়া হয় তার তুলনায় নতুন ধরনের এই পাইকে বেশি সুসাদু বলেন।
“সঠিক উপকরণ এবং সঠিক মাত্রায় তৈরি করা পিৎজা হতে পারে পুষ্টির দিক থেকে সুষম খাবারের একটি অংশ।” বলেন কমবেট।
পিৎজার ক্ষেত্রে এটি একটি সঠিক পন্থা, বলে একমত পোষণ করেন চ্যাপেল হিলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনার নিউট্রিশনাল এপিডিমিওলজি গবেষণার সহকারী অধ্যাপক এবং পিৎজা বিষয়ের অনেক গবেষণার লেখক জেনিফার এম.পটি।
তিনি বলেন, “তবে হোল গ্রেইন, তাজা সবজি এবং কম লবণে দিয়ে তৈরি করা পরিমিত আকারের পিৎজা খাওয়ার ক্ষেত্রে আমি হ্যাঁ বলব।”