গত এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেকেই আলো ছড়িয়েছিলেন। ওয়ানডে অভিষেকে তো আরও উজ্জ্বল মুস্তাফিজুর রহমান। মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তরুণ এই বাঁহাতি পেসার।
Published : 19 Jun 2015, 12:29 AM
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ছাড়িয়ে র্যাঙ্কিংয়ে সাতে বাংলাদেশ
স্পিনারদের চেয়ে বেশি টার্ন মুস্তাফিজের বলে!
ধোনি-মুস্তাফিজের সংঘর্ষ নিয়ে সাবধানী দুই অধিনায়কই
ম্যাচের শুরুতেও সবচেয়ে আলোচিত নাম ছিল মুস্তাফিজ। প্রথমবার ওয়ানডে দলে ডাক পাওয়া বাঁহাতি পেসারের প্রথম ম্যাচেই একাদশে সুযোগ পাওয়া ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত। কিন্তু তাকে দলে রাখতেই বাংলাদেশ সবাইকে চমকে দেয় ৪ পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়ে। অধিনায়ক, টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান কি দারুণ ভাবেই না দিলেন সাতক্ষীরার এই তরুণ!
শুধু একাদশেই রাখা নয়, ইনিংসের প্রথম ওভারেই মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। একজন তরুণ বোলারের জন্য এর চেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আর কি হতে পারে। উইকেট পেতে পারতেন তিনি প্রথম বলেই। এলবিডব্লিউর জোড়ালো আবেদনে রোহিত শর্মা বেঁচে যান বল ব্যাটের কানা ছোঁয়ায়। পরে সেই রোহিতকে আউট করেই মুস্তাফিজ খোলেন উইকেটের খাতা।
রোহিতের নামের পাশে তখন ৬৩ রান। আর কে না জানে, পঞ্চাশ ছাড়ানো রোহিত শর্মার চেয়ে ভয়ংকর ব্যাটসম্যান ওয়ানডেতে এখন কমই আছে! অথচ থিতু হয়ে যাওয়া এই রোহিতকেও দারুণ এক স্লোয়ারে বিভ্রান্ত করেন মুস্তাফিজ। সেই শুরু মুস্তাফিজের স্লোয়ার বলের অনুপম প্রদর্শনীর। বাঁহাতি পেসারের চেয়ে অনেক সময় তাকে মনে হচ্ছিল যেন বাঁহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। ৫ উইকেটের চারটিই যে অফ কাটার স্লোয়ারে!
মুস্তাফিজ প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ২৭ রান। সেই ধাক্কা দ্বিতীয় স্পেলে সামলে নেন দারুণভাবে। রোহিতকে ফেরানোর পর আরেকটি স্লোয়ারে তুলে নেন অজিঙ্কা রাহানেকেও!
পরে সামলেছেন আরেকটি ধাক্কা। সেটি আক্ষরিক অর্থেই ধাক্কা। রান নেওয়ার সময় উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা মুস্তাফিজকে অনেকটা ইচ্ছে করেই ধাক্কা মারেন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। চোট পেয়ে তখন আর বোলিংই করতে পারেননি তরুণ পেসার। বেরিয়ে যান মাঠ থেকেও।
পরে আবার মাঠে ফিরে আবারও আলোকিত করেন শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামকে। রায়না-জাদেজার জুটি তখন হুমকি হয়ে উঠছে বাংলাদেশের জন্য। টানা দুই বলে রায়না আর অশ্বিনকে ফিরিয়ে ম্যাচই কার্যত শেষ করে দেন মুস্তাফিজুর। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যানই বা বাদ থাকবে কেন? রবীন্দ্র জাদেজাকেও ফিরিয়ে পূরণ করেন স্বপ্নের ৫ উইকেট। নিজের বলে মোহিত শর্মার ফিরতি ক্যাচ না ফেললে হতে পারত ৬ উইকেটও।
গত জুনে ভারতের বিপক্ষে এই মাঠেই অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন। সেই তাসকিন এখন আরও পরিণত। এই ম্যাচে প্রথম দুটি উইকেট নিয়েছেন তিনিই। এর মধ্যেই সাড়ম্বরে নিজের আগমন বার্তা জানিয়ে দিলেন মুস্তাফিজ। এই তাসকিন-মুস্তাফিজরাই এখন নতুন বাংলাদেশের প্রতীক।
অভিষেকে বাংলাদেশের সেরা বোলিং:
তাসকিন আহমেদ | ৮-০-২৮-৫ | ভারত | মিরপুর | ২০১৪ |
মুস্তাফিজুর রহমান | ৯.২-১-৫০-৫ | ভারত | মিরপুর | ২০১৫ |
তাইজুল ইসলাম | ৭-২-১১-৪ | জিম্বাবুয়ে | মিরপুর | ২০১৪ |
সোহাগ গাজী | ৯.৫-২-২৯-৪ | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | খুলনা | ২০১২ |
রুবেল হোসেন | ৫.৩-০-৩৩-৪ | শ্রীলঙ্কা | মিরপুর | ২০০৯ |