ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) আগামী আসরে চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়ালসকে নিষিদ্ধ করতে বলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের জায়গায় সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কারকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দিতেও বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।
Published : 27 Mar 2014, 02:35 PM
আদালতের প্রস্তাবের পর ভারতের সাবেক অধিনায়ক গাভাস্কার এনডিটিভিকে জানান, সুপ্রিম কোর্টের দেয়া দায়িত্ব আমি খুশির সঙ্গেই করবো। আমি এ জন্য নিজেকে সম্মানিত মনে করছি।
মঙ্গলবার ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান এন শ্রীনিবাসনকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছিল দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই তার সরে দাঁড়ানোটা প্রয়োজন বলে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল।
শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআইয়ের সভাপতির পদ থেকে দুই দিনের মধ্যে সরে না দাঁড়ালে আগামী বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে তাকে সরে দাঁড়াতে আদেশ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার এ নিয়ে আদালত কোনো রায় না দিয়ে প্রস্তাবগুলো বোর্ডকে পাঠায়।
আইপিএল এর সপ্তম আসর শুরু হবে আগামী ১৬ এপ্রিল। আইপিএল-এ চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়ালস দলে ম্যাচে পাতানো নিয়ে তদন্ত চলায় দলদুটিকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেয়া ঠিক নয় বলে আদালত মনে করে। দু'টি দলই আইপিএল এর সাবেক চ্যাম্পিয়ন।
এছাড়া বিসিসিআই বা আইপিএলের সঙ্গে শ্রীনিবাসনের কোম্পানি ইন্ডিয়া সিমেন্টকে জড়িত করতে নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ইন্ডিয়া সিমেন্ট চেন্নাই সুপার কিংসের মালিক। ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ও আইপিএলএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর রামন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা। শ্রীনিবাসন ইন্ডিয়া সিমেন্টেসের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক।
এর আগে শ্রীনিবাসনের মেয়ের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পনের বিরুদ্ধে আইপিএলে বাজি ধরা এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমাণ পায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। সাবেক বিচারপতি মুকুল মুডগালের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন এর আগে তাদের যে প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়, তার ওপরই এ শুনানি চলছে।
আইপিএলের দল রাজস্থান রয়্যালসের মালিক রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে আরো তদন্ত প্রয়োজন বলেও কমিশন সুপারিশ করে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত কমিশনের এই সুপারিশ আমলে নিয়ে সব বিষয়েই তদন্তের জন্য বলেছে। তবে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সবার আগে শ্রীনিবাসনকে সরে দাঁড়াতে হবে বলে মনে করে আদালত।
ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্রীশান্তসহ রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত অনেকের পরিচয় ফাঁস হতে থাকে, গ্রেপ্তার হন আরো কয়েকজন।
তারই ধারাবাহিকতায় প্রেপ্তার হন চেন্নাই সুপার কিংসের ‘প্রিন্সিপাল’ ও শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পন। এরপর শ্রীনিবাসনের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের ক্রিকেট অঙ্গন। ফলে ওই সময় বিসিসিআইয়ের এক জরুরি সভায় শ্রীনিবাসনকে এক মাসের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
অবশ্য কিছুদিন পরই জামিনে মুক্তি পান মায়াপ্পন। তার শ্বশুরও বোর্ড প্রধানের দায়িত্বে ফেরেন। বিসিসিআইয়ের প্রধান শ্রীনিবাসন এখন হতে যাচ্ছেন ‘তিন মোড়ল’ ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবে চলে যাওয়া আইসিসির সর্বক্ষমতাসম্পন্ন চেয়ারম্যান।